দলকে জয়ের পথ দেখানোর দায়িত্বটা তো সর্ব প্রথম অধিনায়কের উপরই বর্তায়। তা কাল রাতে নিজের সেই দায়িত্বটা যথাযথভাবেই পালন করেছেন তামিম ইকবাল। কাল বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ফরচুন বরিশালকে প্রথম জয় উপহার দিয়েছেন তিনিই। তামিমের ব্যাটে চড়ে তার দল বরিশাল হারিয়েছে টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলতে থাকা মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীকে। বরিশালের জয়টা ৫ উইকেটের।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে তামিমের বরিশাল জিততে জিততেও শেষ পর্যন্ত হার মেনেছিল জেমকন খুলনার কাছে। কাল আর সেই ভাগ্য বরণ করতে হয়নি তামিমদের। বরং পুরো দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে অধিনায়ক তামিম অনায়াসেই বরিশালকে জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে দিয়েছেন। দলকে জেতাতে তিনি খেলেছেন ৬১ বলে ৭৭ রানের অপরাজিত ইনিংস। ম্যিাচ জেতানো ইনিংসটিতে তিনি ২টি ছক্কা ও ১০টি চার মেরেছেন। যে ইনিংসটি তাকে এনে দিয়েছে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার।
দলকে প্রথম জয়ের স্বাদ দিতে অধিনায়ক তামিমই রেখেছেন মুখ্য ভূমিকা। তবে বরিশালের জয়ে বোলারদের অবদানও কম নয়। বিশেষ করে পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বির। প্রতিপক্ষ রাজশাহীকে সাধ্য সীমানায় বেঁধে ফেলতে কামরুল রাব্বি ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান দিয়ে তুলে নেন ৪টি উইকেট। তার সঙ্গে দলের অন্য বোলাররাও দারুণ বোলিং করেছেন। বরিশালের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের মুখে রাজশাহী ৯ উইকেট হারিয়ে তুলতে পারে মাত্র ১৩২ রান।
বরিশালের ব্যাটসম্যানেরা তাই ১৩৩ রানের সহজ লক্ষ্যই পেয়েছিল। অবশ্য শুরুতেই মেহেদী হাসান মিরাজ আউট হয়ে যাওয়ায় একটু চাপে পড়ে গিয়েছিল বরিশাল। কিন্তু অধিনায়ক তামিম দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সেই চাপ মুছে ফেলেছেন। মিরাজের বিদায়ের পর পাভেজ হোসেন ইমনকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৬১ রানের জুটি গড়েন তামিম। এই জুটিতেই মূলত বরিশালের মাথা থেকে চাপের বোঝাটা নেমে যায়। ২৩ রান করে পারভেজের বিদায়ের পর তৌহিদ হৃদয়কে নিয়ে ৪৬ রানের জুটি গড়েন তামিম। যে জুটিতে বরিশাল প্রায় জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়। কিন্তু এরপর আবারও খানিকটা চাপে পড়ে বরিশাল। ১১২ থেকে ১২৫-১৩ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে বরিশাল। একে একে বিদায় নেন তৌহিদ (১৭), আফিফ হোসেন (০) ও ইরফান শুকুর (৩)। কিন্তু পরপর দুউ ওভারে (১৮তম ও ১৯তম) দুটি ছক্কা মেরে তামিম সব চাপে ধুয়ে দিয়ে বরিশালের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করা রাজশাহীর শুরু হয়েছিল দারুণ। দুই ওপেনারই করেন সমান ২৪ রান করে। কিন্তু ২৪ রান করে দলীয় ৩৯ রানের মাথায় অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আউট হওয়ার পরই রাজশাহীর ইনিংসে ধস নামে। বিনা উইকেটে ৩৯ থেকে ৬৩ রানে যেতেই হারিয়ে ফেলে ৫ উইকেট। এক এক করে বিদায় নেন রনি তালুকদার (৬), মোহাম্মদ আশরাফুল (৬), আনিসুল ইসলাম ইমন (২৪) ও নুরুল হাসান (০)।
এই হঠাৎ বিপর্য রোধ করে দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন মেহেদি হাসান। কিন্তু অন্যদের ব্যর্থতায় তার একক চেষ্টা খুব বেশি ফলপ্রসু হয়নি। তবে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৪ রানের ইনিংসটি খেলেন তিনিই। তার এই ইনিংসের সুবাদেই মূলত ১৩২ রানের পুঁজি পায় রাজশাহী।