অ্যাডিলেডের ‘৩৬’ লজ্জার ধাক্কায় বির্পযস্ত ভারত। সেই বির্পযয় থেকে ঘুরে দাঁড়ানোটাই ছিল ভারতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কঠিন এই সময়েই কিনা অনাকাঙ্খিতভাবে অজিঙ্কা রাহানের কাঁধে চাপে অধিনায়কত্বের বোঝা। দুই চাপে আরও ভেঙে পড়াটা রাহানের জন্য অস্বাভাবিক ছিল না। কিন্তু অন্য ধাতু দিয়ে গড়া রাহানে ভেঙে পড়েননি। বরং চাপকে শক্তি বানিয়ে ‘অধিনায়ক’ রাহানে খলে ফেললেন ভারতের ঘুরে দাঁড়ানোর পথ।
দুই চাপ কাঁধে নিয়ে রাহানে করেছেন সেঞ্চুরি। তার সেঞ্চুরিতে চড়ে টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ভারত যে অবস্থানে দাঁড়িয়ে, সেটাকে পথ না বলে মহাসড়কই বলা উচিত। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ১৯৫ রানের জবাবে সফরকারী ভারত ৫ উইকেট হারিয়ে এরই মধ্যে তুলে ফেলেছে ২৭৭ রান। মানে এরই মধ্যে রাহানের ভারত পেয়ে গেছে ৮২ রানের লিড। তাদের হাতে রয়েছে আরও ৫টি উইকেট। তার চেয়েও বড় কথা, অস্ট্রেলিয়ানদের পথের কাটা হয়ে এখনো উইকেটে আছেন রাহানে। দিন শেষে যিনি ব্যাট করছেন ১০৪ রানে।
নিয়মিত অধিনায়ক বিরাট কোহলি প্রথম সন্তান জন্ম মুহূর্তে স্ত্রীর পাশে থাকতে ফিরে গেছেন দেশ ভারতে। মেলবোর্ন টেস্টে তাই হুট করেই অধিনায়কত্বের বোঝা চাপে রাহানের কাঁধে। সেও বোঝাটাও এমন সময় চেপেছে, যখন ৩৬-এর লজ্জায় দিশেহারা দল। কিন্তু অধিনায়কত্বের মোড়ক গায়ে লাগিয়ে রাহানে এক ইনিংস দিয়েই সেই ‘৩৬’-এর অন্ধকার থেকে দলকে এক ঝাটকায় বের করে আনলেন আলোর পথে। অ্যাডিলেডের ওই লজ্জা ভুলে ভারত শিবিরে এখন স্বস্তির হাসি!
অসিদের ১৯৫ রানে বেঁধে রেখে প্রথম দিনেই ১ উইকেটে ৩৬ রান তুলে ফেলে ভারত। এই রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করে আজ যোগ করেছে আরও ২৪১ রান। হারিয়েছে ৪ উইকেট। দলকে এমন শক্ত অবস্থানে দিতে রাহানে একে একে জুটি গড়েছেন চেতেশ্বর পুজারা (১৭), হনুমা ভিহারি (২১), রিষভ পান্ত (২৯) ও রবিন্দ্র জাদেজার (৪০*) সঙ্গে। সবচেয়ে কার্যকরী জুটিটা গড়েছেন রবিন্দ্র জাদেজার সঙ্গেই। ষষ্ঠ উইকেটে তারা এরই মধ্যে গড়েছেন অপরাজিত ১০৪ রানের জুটি। এই জুটিই মূলত ভারতকে পৌঁছে দিয়েছে এমন উচ্চতায়। যেখানে দাঁড়িয়ে ৪০০ পেরোনো ইনিংসের স্বপ্নও দেখতে পাচ্ছে ভারত।
তবে ৪০০-এর স্বপ্ন পূরণ হোক না হোক, মেলবোর্নে বক্সিং যে টেস্টের নিয়ন্ত্রণ যে ভারতের হাতে, সেটি দিবালোকের মতোই স্পষ্ট।