আপন ঠিকানায় হকাররা, বদলে গেছে ফুটপাতের দৃশ্যপট

হঠাৎ বদলে গেল সিলেটের দৃশ্যপট। এই তো দুদিন আগে ফুটপাত ছিল হকারদের দখলে। একশো-ষাট-দেড়শো টাকার ডাকে মুখরিত থাকত ফুটপাতগুলো। মানুষের ভিড়ে গাড়ি চলাচলেও ব্যাঘাত ঘটত। সারাক্ষণই যানজটের মধ্যে পড়তে হত পথচারীদের। সাধারণ লোকজনের হেটে চলাচলে অসুবিধা হত ফুটপাতে থাকা হকারদের কারণে। এখন হকাররা আপন ঠিকানা পাওয়ায় ফুটপাত এখন অনেকটা হকারশূন্য। চলাচলেও সুবিধা হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। হকারবিহীন ফুটপাত নগরীর সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

সিলেট নগরীর ব্যস্ততম সড়ক সুরমা পয়েন্ট, তালতলা পয়েন্ট, কোর্ট পয়েন্ট, বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার চৌহাট্টা পয়েন্টের রাস্তাগুলো হকারদের দখলে থাকত। সকাল থেকে রাত অবধি ফুটপাতে চলত ব্যবসা। একারণে সড়কের অর্ধেকই তাদের দখলে থাকত। যার ফলে যানজট লেগেই থাকত এই সড়কগুলোতে। এ নিয়ে সিলেট হকার, ব্যবসায়ী ও সিটি কর্পোরেশন ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ-প্রশাসনের মধ্যে প্রায়ই বাগড়া হত।

মানুষের দুর্ভোগের কথা ভেবে প্রশাসন নিয়ে সিসিক বারবার অভিযান চালালেও কোনো কাজ হয় নি। সিসিক কতৃপক্ষ  অনেকবার বৈঠক করেন হকার উচ্ছেদে। প্রায় প্রতিদিনই উচ্ছেদ অভিযান হতো। তবুও কোনো কাজে আসেনি সে সব শ্রম। ফের আগের জায়গায় ফিরে আসতো হকারারা। আবার হকার ব্যবসায়ীরাও আতংকের মধ্যে থাকতেন। কখন মেয়র অভিযানে আসেন আর সবকিছু নিয়ে চলে যান সেই ভয়ে সারাদিন তাদের ব্যবসা করতে হতো। এখন আর এসব করতে হবে না। হকাররা ফিরে পেয়েছেন তাদের আপন ঠিকানা। আর পথচারীরা পেয়েছেন ফুটপাত। এখন আর ফুটপাতে বসতে পারবেন না ভ্রাম্যমাণ হকাররা।

ভ্রাম্যমাণ হকার ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ও সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) যৌথ উদ্যোগে নগরীর লালাদিঘীরপারের খোলা মাঠে এক হাজার সত্তর জন ব্যবসায়ীদের বসার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার থেকে সেখানে বসছেন হকার ব্যবসায়ীরা।

আর অন্যদিকে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে পর্যটন নগরীতে দৃষ্টিনন্দন করতে কাজ করা হচ্ছে। গত জানুয়ারীতে দরগা গেইট এলাকায় ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুতের কাজ সম্পন্ন হয়। পুরো নগরীতে তা সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজও চলছে।

সবশেষ চৌহাট্টায় রাস্তায় ডিভাইডার দিয়ে গাধাফুলের গাছ লাগিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসে সিসিকের উন্নয়ন কাজ। এভাবেই জিন্দাবাজার-বন্দরবাজারের সড়কগুলোতেই কাজ সম্পন্ন করা হবে। কাজ শেষ হলে সৌন্দর্য ফুটে উঠবে সিলেট নগরীর এমনটাই দাবি সিসিক কতৃপক্ষের।

এ ব্যাপারে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, নগরবাসীর সহযোগিতা পেলে সিলেট হবে সৌন্দর্যের নগরী।  সিলেটকে প্রকৃত অর্থে আধ্যাত্মিক নগরী গড়ে তুলতে  সেভাবেই এগুচ্ছি আমরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *