স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: বোরোর পর আমন মৌসুমেও ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ সরকার। বাজারে ধান-চালের মূল্য বেশি থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে সীমিত হয়ে আসছে মজুতের পরিমাণ। সরকারের সামনে তাই শেষ ভরসা আমদানি।
বিজ্ঞাপন
খাদ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত বোরো মৌসুমে সরকার নির্ধারিত পরিমানে ধান-চাল সংগ্রহ করতে না পারায়, আমন মৌসুমে সাড়ে আট লাখ টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করতে চেয়েছিল। এরমধ্যে ২ লাখ টন ধান এবং সাড়ে ৬ লাখ চাল কেনার লক্ষ্য ঠিক করেছিল।
গত ৭ নভেম্বর শুরু হওয়া সংগ্রহ অভিযান শেষ হয় ২৮ ফেব্রুয়ারি। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ লাখ মেট্রিক টনের মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৬১ হাজার মেট্রিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৮ শতাংশ।
জানা গেছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে ৮ হাজার ২৭৪ মেট্রিক টন। সিদ্ধ চাল ৫২ হাজার ৫৫১ মেট্রিক টন এবং আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে ২ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন। গত বোরো মৌসুমে সাড়ে ১৯ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশষ্য সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও তার অর্ধেকও পূরন করা যায়নি।
চালকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কে এম লায়েক আলী বলেন, এবার বোরো-আমন দুই মৌসুমেই বাজারে চালের দাম বাড়তি ছিল। এ কারণে মিলাররা সরকারের ধান-চাল সংগ্রহে আগ্রহ দেখাননি।
এদিকে সরকারি গুদামে চালের মজুত তলানিতে নেমে গেছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৬ দশমিক ৬৯ লাখ মেট্রিক টন চাল মজুত আছে। এরমধ্যে চাল ৫ দশমিক ২৮ লাখ মেট্রিক টন, আর গম ১ দশমিক ৪১ লাখ মেট্রিক টন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, একদিকে করোনাভাইরাস অন্যদিকে দফায় দফায় ঝড়-বন্যায় মজুতের ওপরে চাপ পড়েছে। আবার বোরো সংগ্রহও হয়নি। সব মিলিয়ে মজুত কমেছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার মজুত বাড়াতে বিভিন্ন দেশ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির প্রক্রিয়া চালু রেখেছে।
খাদ্য সচিব ড. নাজমানারা খানুম জানান, বাজারে আমদানি করা চাল আসতে শুরু করেছে। দামও নিয়ন্ত্রণে এসে গেছে। এ পর্যন্ত যে পরিমান চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তা দিয়ে পরবর্তী মৌসুম পর্যন্ত চলে যাবে। কোনো ধরনের সংকট হবে না।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে আমন মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সাড়ে আট লাখ ধান চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সরকার। কেজি প্রতি ২৬ টাকা দরে ২ লাখ মেট্রিক টন ধান আর ৩৭ টাকা মূল্যে ৬ লাখ মেট্রিকটন চাল এবং ৩৬ টাকা দরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল কেনার কথা ছিল। সময় শেষ হয়ে এলেও মাত্র ৮ শতাংশের বেশি খাদ্যশষ্য অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য অধিদফতর।