ভারত উপমহাদেশে মুসলিম জাগরণের অন্যতম রূপকার আল্লামা মুহাম্মদ ইকবাল। তাঁর কবিতা ও অন্যান্য লেখনির মাধ্যমে শুধু ভারতই নয়, সমগ্র মুসলিম বিশ্বকে তিনি নবউদ্যোমে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন।
১৮৭৭ সালের ৯ই নভেম্বর আল্লামা ইকবাল তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের অর্ন্তগত পাঞ্জাবের শিয়ালকোটে জন্মগ্রহণ করেন। বিশ্বজুড়ে মুসলিম জাগরণের জন্য কাজ করে যাওয়া এ মহামানবের জীবনের অনেককিছুই আমাদের অজানা। এখানে প্রায় লোকের কাছেই অজানা তার জীবনের ১০টি বিষয় উল্লেখ করা হল।
১. আল্লামা ইকবালের পিতা শেখ নূর মুহাম্মদ কবির জন্মের সময় স্বপ্নে দেখেন, আকাশ থেকে উড়ে অসম্ভব সুন্দর এক কবুতর তার কোলের উপর বসেছে। পরে স্বপ্নবিশারদদের কাছে এ বিষয় সম্পর্কে জানতে গেলে তাকে বলা হয়, শীঘ্রই তিনি ভাগ্যবান এক পূত্রের পিতা হতে যাচ্ছেন।
২. কবির পিতা কবিকে প্রথমে মাদ্রাসায় পড়ান। পরবর্তীতে তার বন্ধু বিখ্যাত আলেম সাইয়েদ মীর হাসানের পরামর্শে কবিকে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলেও ভর্তি করানো হয়।
৩. আল্লামা ইকবাল কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজে স্কলারশিপ নিয়ে ১৯০৬ সালে গ্রাজুয়েশন করেন। পরবর্তীতে ১৯০৮ সালে জার্মানীর মিউনিখের লুডভিক ম্যাক্সিমিলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেন।
৪. কবি জীবনে তিনবার বিবাহ করেন। ১৮৯৫ সালে করিম বিবি ও ১৯১০ সালে দ্বিতীয় স্ত্রী সরদার বেগমকে তিনি বিবাহ করেন। সর্বশেষ ১৯১৪ সালে তিনি মুখতার বেগমকে বিবাহ করেন।
৫. ইকবালের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘আসরারে খুদী’ ফারসি ভাষায় লিখিত এবং তাতে ধর্মীয় দর্শন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
৬. আল্লামা ইকবালকে দুটি উপাধিতে ডাকা হয়। ‘মুফাককির-ই-পাকিস্তান’ অর্থাৎ পাকিস্তানের চিন্তাবিদ এবং ‘হাকীম-উল-উম্মত’ অর্থাৎ উম্মতের প্রাজ্ঞজন।
৭. জার্মানীর হাইডেলবার্গে যে রাস্তার পাশে জার্মাানীতে অবস্থানকালে কবি বসবাস করতেন, তার সম্মানে তার নামে সে রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে।
৮. উপমহাদেশের মত ইরানেও তার ফারসি কাব্যের মাধ্যমে আল্লামা ইকবাল সমানভাবে জনপ্রিয়। ইরানে তিনি ‘ইকবাল লাহোরী’ হিসেবে অধিক পরিচিত।
৯. আল্লামা ইকবাল উর্দু ও ফারসিতে তার কাব্যচর্চা করলেও আরবি ও পাঞ্জাবি ভাষাতেও তার রচিত কিছু কবিতা পাওয়া যায়।
১০. কাব্য ও দর্শন ছাড়াও রাজনীতির ময়দানেও আল্লামা ইকবাল ছিলেন সক্রিয়। ১৯৩০ সালে তিনি সর্বভারতীয় মুসলিম লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।