দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রাপ্তির জন্য আগামী বছরের শেষ নাগাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বাড়তি ১০০ কোটির বেশি করোনার টিকা তৈরি হবে ভারতে।
স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের অনানুষ্ঠানিক কৌশলগত ফোরাম দ্য কোয়াড্রিলেটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগের (কোয়াড) যৌথ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। খবর এএফপির
এক দশক আগে কোয়াড প্রতিষ্ঠিত হলেও শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক এই প্রথম। চীনের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়তে কোয়াডের নেতারা এ ধরনের পদক্ষেপ নিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে কোয়াডের এই উদ্যোগকে যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে চীন। ভারতকে বিশেষ চাপে ফেলা হয়েছে বলেও সমালোচনা করেছে চীন।
কোয়াডভুক্ত চার দেশের নেতারা ভার্চ্যুয়াল ওই বৈঠক করেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চীনকে মোকাবিলা করতে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের কথা বলেছেন।
বাইডেন বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে পরিচালিত, মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে চায় ও দমনপীড়ন থেকে মুক্ত থাকতে চায়।’
পাকিস্তান, জিম্বাবুয়ে ও ডমিনিকান রিপাবলিকে চীনের টিকা সরবরাহের পর এই পদক্ষেপ নিল কোয়াড।
বৈঠকে ভারতের বায়োলজিক্যাল লিমিটেড ২০২২ সালের শেষ নাগাদ অতিরিক্ত ১০০ কোটি টিকা উৎপাদন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে যে টিকা এক ডোজ দিলে হয়, তেমন টিকাকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের জনসন অ্যান্ড জনসন টিকা অনুমোদন করেছে। এ পর্যন্ত যতগুলো টিকা বিশ্বজুড়ে অনুমোদন পেয়েছে এবং ব্যবহৃত হচ্ছে, তার মধ্যে এটিই একমাত্র এক ডোজের টিকা। অর্থাৎ করোনা প্রতিরোধে এক ডোজ টিকা নিলেই চলে।
বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাকে সুলিভান এই পরিকল্পনাকে গুরুত্বপূর্ণ যৌথ প্রতিশ্রুতি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অগ্রাধিকারভিত্তিতে এই টিকা পাবে।
শীর্ষ নেতাদের ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, কোয়াডের এই টিকা কর্মসূচি বিশ্বের কল্যাণের জন্য। এটি ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন ঘটাবে। ভারত এর মধ্যেই ৭০টি দেশে টিকা সরবরাহ করেছে। কোয়াডের কর্মসূচি নতুন নজির তৈরি করবে বলে মনে করছে দেশটি।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি এই কর্মসূচিতে মহামারি-পরবর্তী পরিস্থিতি কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।’