করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) বিশ্বজুড়ে হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের মানবিক সাহায্যেরও প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা মার্ক লোকক।
মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে এমনই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এই সাহায্য আগামী বছর থেকেই প্রয়োজন পড়বে আর এ জন্য জাতিসংঘ ৩ হাজার ৫শ কোটি মার্কিন ডলার চেয়েছে।
জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা বলেন, ‘আগামী বছর যাদের মানবিক সাহায্যের প্রয়োজন পড়বে তারা সবাই যদি একটি দেশে বাস করতেন তাহলে সেটি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর দেশ হতো। এই মহামারি বিশ্বের সবচেয়ে ভঙ্গুর ও সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনীতির দেশগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
মার্ক লোকক বলেন, ‘আমরা সবসময়ই হতদরিদ্র মানুষদের দুই-তৃতীয়াংশের কাছে পৌঁছাতে চাই। বাকি যারা থেকে যাচ্ছে তাদের রেড ক্রসের মতো অন্যান্য দাতব্য সংস্থা সহায়তার চেষ্টা করবে, যাতে সেই শূন্যতা পূরণ করা যায়।’
তিনি জানান, চলতি বছর দাতা দেশগুলো রেকর্ড ১ হাজার ৭শ’ কোটি মার্কিন ডলার দান করেছে। যা দিয়ে নির্ধারিত লক্ষ্যের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।
এ বিষয়ে মার্ক লোকক বলেন, ২০২১ সালের জন্য আমাদের ৩ হাজার ৫শ কোটি (৩৫ বিলিয়ন) ডলার প্রায়োজন। যা একটি বিশাল অংকের অর্থ। কিন্তু ধনী দেশগুলো তাদের জনগণকে মহামারি থেকে সুরক্ষা দিতে যে পরিমাণ ব্যয় করছে তার তুলনায় এই অর্থ খুবই সামান্য।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে জাতিসংঘ ৫৬টি দেশে মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দিতে ৩৪টি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সংস্থাটি এর মাধ্যমে ১৬ কোটি মানুষের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে চায়।
এর বাইরেও আরও অনেক মানুষের সহায়তা প্রয়োজন। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বে প্রায় সাড়ে ২৩ কোটি মানুষকে ক্ষুধা, যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাব মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৪ লাখ ৮৬ হাজার ৮২৯ জনের এবং আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৪১ লাখ ৯৪ হাজার ৬৯২ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৪২ হাজার ১০৯ জন।