1. hmgrobbani@yahoo.com : admin :
  2. news@soroborno.com : Md. Rabbani : Md. Rabbani
  3. sayefrahman7@gmail.com : Sayef Rahman : Sayef Rahman
সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩, ০৯:১২ অপরাহ্ন

কোভিড মোকাবিলায় তথ্য নয় দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করুন: টিআইবি

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১০ জুলাই, ২০২১

ঢাকা : ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন স্বাক্ষরিত এক আদেশে সরকারি হাসপাতালসমূহে কোভিড-১৯ অতিমারিকালে গণমাধ্যমের কাছে রোগী ও স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক তথ্য আদান প্রদানে নিষেধাজ্ঞা জারিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে অবিলম্বে এই নির্দেশনা বাতিলের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। অবাধ তথ্যপ্রবাহের মাধ্যমে সামষ্টিকভাবে মহামারি নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক প্রয়াস চালানোর বিপরীতে কাদের স্বার্থে এ ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো, তা খতিয়ে দেখে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (১০ জুলাই) এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দেশে বর্তমানে কোভিড-১৯ অতিমারির সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে এবং আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় প্রতিদিনই রেকর্ড ছাড়াচ্ছে। এমন সময় গত বৃহস্পতিবার ঢাকা জেলাধীন সরকারি হাসপাতালসমূহের স্বাস্থ্য ও রোগীর সেবাবিষয়ক যে-কোনো তথ্য গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশে বিধিনিষেধ আরোপ করে। মুক্ত গণমাধ্যম ও অবাধ তথ্য প্রবাহের সাংবিধানিক অধিকার এবং তথ্য অধিকার আইনলব্ধ ‘তথ্য জানার অধিকার’- এর পুরোপুরি লঙ্ঘন। একইসঙ্গে তা স্বাধীন ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং গণমাধ্যমের অবাধ তথ্য সংগ্রহ ও প্রচারে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা প্রদানের শামিল।’

তিনি বলেন, ‘অতিমারি নিয়ন্ত্রণে চলা লকডাউনে এমনিতেই সাধারণের জন্য তথ্যপ্রাপ্তির সুযোগ সংকুচিত, সেখানে গণমাধ্যমকে তথ্য না দেওয়ার এমন নির্দেশ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবার হালনাগাদ তথ্যপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করবে। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ের হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতার সত্যিকারের চিত্র পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে, যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে আদেশের সূত্র হিসেবে সিভিল সার্জন যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার কথা বলেছেন তারা কারা? এবং কী উদ্দেশ্যে স্থানীয়ভাবে তথ্যের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন? এটি অতিমারি নিয়ন্ত্রণে কী সুফল বয়ে আনবে? সেটি জরুরি ভিত্তিতে পরিষ্কার করতে হবে এবং বারংবার এ ধরনের বিধিনিষেধ আরোপের অশুভ প্রয়াসের চক্র বন্ধে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।’

স্বাস্থ্যখাতে চলমান অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার তথ্য গোপনের অভিপ্রায়ের অংশ হিসেবে এই আদেশ কী-না! এমন সন্দেহ প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘এ নির্দেশনা জারির পরদিনই স্বাস্থ্য অধিদফতর দশটির বেশি জাতীয় দৈনিকে রাষ্ট্রীয় তথা জনগনের অর্থব্যয়ে ‘করোনার ভয়াবহতা ঠেকাতে বিধিনিষেধ আন্তরিক ও কঠোরভাবে পালনের আকুল আবেদন’ শীর্ষক বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে। সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্যখাতে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি সংঘটিত হয়নি বলে সাফাই গাইবার অপচেষ্টা করেছেন। অথচ গত একবছরে স্বাস্থ্যখাতের নিয়োগ, ক্রয়, অবকাঠামো নির্মাণ ও সেবাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগুনতি অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার সংবাদ পত্রিকার পাতা খুললেই পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে উত্থাপিত প্রতিবেদনেও যা প্রতিভাত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘টিআইবির সাম্প্রতিক গবেষণাগুলোতেও এ খাতে সুশাসনের ঘাটতির নানা চিত্র উঠে এসেছে, যা বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। তাই এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং তথ্য প্রদানে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে মূলত স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা ঢাকার প্রচেষ্টা একইসূত্রে গাঁথা বলে মনে করা মোটেও অবান্তর হবে না। বিশেষ করে, যখন বিগত বছরগুলোতে স্বাস্থ্যখাতে সংঘটিত অধিকাংশ দুর্নীতি গণমাধ্যমের অনুসন্ধানেই বেরিয়ে এসেছে, তখন বিধিনিষেধের মাধ্যমে সাংবাদিকদের স্থানীয়ভাবে তথ্য সংগ্রহে বাধা প্রদান অনিয়ম-দুর্নীতি ও বিদ্যমান অব্যবস্থাপনার তথ্য গোপনের বিস্তৃত সুযোগ তৈরি করবে; যা অতিমারি মোকাবিলায় গৃহীত সমস্ত ইতিবাচক উদ্যোগকেও বিনষ্ট করবে। তাই অবিলম্বে এ ধরনের স্বেচ্ছাচারী আদেশ প্রত্যাহার করে অবাধ তথ্য প্রবাহের মাধ্যমে কার্যকরভাবে অতিমারি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।’

ড. জামান বলেন, ‘যখন সরকারিভাবে চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্প্রসারণের ঘাটতিতে সংক্রমণের একবছর চারমাস পরও সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ সংকটের কারণে একজন সাধারণ কোভিড রোগী গড়ে ৫ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণে বাধ্য হচ্ছেন। হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার অভাবে কোভিড রোগী মৃত্যুর ঘটনা উচ্চ আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এই অবস্থায় তথ্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করে অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণই হবে প্রত্যাশিত।’

More News Of This Category
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি