স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ৩ লাখেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনকে হারিয়ে পাঁচ বছরের জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ‘নগরপিতার’ চেয়ারে বসতে যাচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী। আলোচনার প্রায় বাইরে থাকা রেজাউল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে চমক দেখিয়েছিলেন। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সেই নির্বাচন স্থগিত হয়ে গেলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। মহামারি পরিস্থিতিতে একপর্যায়ে নির্বাচন নিয়েই সংশয় তৈরি হয়।
তবে ১০ মাস পর ফিরে আসা নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় পেয়ে রেকর্ড গড়েছেন রেজাউল। চট্টগ্রাম নগরবাসী পাঁচ বছরের জন্য তাদের সেবার দায়িত্ব নেওয়ার রায় দিয়েছেন রেজাউলকে।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে রেজাউল করিমকে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান। তিনি নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে স্থাপিত নির্বাচন কমিশনের অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ফল ঘোষণা করছিলেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, চট্টগ্রাম সিটির ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন ভোটারের মধ্যে নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৫৪৩ জন। বৈধ ভোটের সংখ্যা ৪ লাখ ৩৫ হাজার ৪৯০। বাতিল হয়েছে ১ হাজার ৫৩ ভোট। ভোটের শতকরা হার ২২ দশমিক ৫২ শতাংশ।
নির্বাচনের মোট ৭৩৫টি কেন্দ্রের মধ্যে স্থগিত থাকা দু’টি কেন্দ্র বাদে ৭৩৩টি কেন্দ্রের ফলে রেজাউল করিম চৌধুরী নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন পেয়েছেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট। দু’জনের ভোটের ব্যবধান ৩ লাখ ১৬ হাজার ৭৫৯।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘ছোটখাট বিচ্ছিন্ন দুয়েকটি ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। একটি ওয়ার্ডে দু’টি কেন্দ্রে বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটায় সেখানে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। বাকি ৭৩৩টি কেন্দ্রের ফলে মেয়র পদে নৌকা প্রতীকে রেজাউল করিম চৌধুরী বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।’
ফল ঘোষণার সময় জিমনেশমিয়ামে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও রেজাউল করিম চৌধুরী আসেননি। তার প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে মোট ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্রে মেয়র পদে নির্বাচন হয়েছে। তবে ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডে দু’টি কেন্দ্রে সহিংসতার কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত হওয়ায় বাকি ৭৩৩টি কেন্দ্রের ফল ঘোষণা করা হয়েছে। ভোটগ্রহণের পর সন্ধ্যা ৬টায় ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়।