দেশের আপামর জনগণ, রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় দেশের সূর্যসন্তানদের স্মরণ করছে কৃতজ্ঞ জাতি।
সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে সর্বস্তরের জনসাধারণ এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
মহান একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষভাগে এদিনে বাঙালির জয় যখন সুনিশ্চিত তখন এদেশের দোসরদের সহযোগিতায় পাকহানাদার বাহিনী হত্যা করেছিল শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ হাজারো বুদ্ধিজীবীকে। সেই থেকে ১৪ ডিসেম্বর দিনটিকে জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে, পালন করে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে।
মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি সৌধে ভোরের আলো ফোঁটার আগেই মানুষের ঢল নামে। সকাল ৭টা ১০ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পক্ষ থেকে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম শামীম উজ জামান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকীব আহমেদ চৌধুরি শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
নীরবতা পালনের মাধ্যমে তার শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের সময় বিউগলে বেজে উঠে করুন সুর।
অন্যবছর এই দিনটিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী নিজে উপস্থিত থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেও করোনা মহামারির এই সময়ে ভাইরাসের বিস্তার রোধে অনেক রাষ্ট্রীয় আয়োজনই সীমিত করে আনতে হচ্ছে।
এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার এবং প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। পরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম চেতনাই ছিল অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, বাঙালি জাতীয়তাবাদ। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির লক্ষ্য নিয়ে জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বাধীনতার এত বছর পরেও সেই সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এখনও ষড়যন্ত্র করছে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আমাদের শপথ হবে এদের যে বিষবৃক্ষ এখনও ডালপালা বিস্তার করে আছে, তা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সমূলে উৎপাটন করবো।’
এদিন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন ছাড়াও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (মার্ক্সবাদী), জাসদ, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, তরিকত ফাউন্ডেশন ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
এ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য টিভি চ্যানেল বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে।
এছাড়া আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে। মহামারির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি পালিত হবে।