নিউজ ডেস্ক :: জৈন্তা জামেয়া ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসা নিয়ে সিলেটের স্থানীয় কয়েকটি প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় আপত্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা, আজগুবী, কাল্পনিক ও অসত্য সংবাদ প্রকাশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জৈন্তা মহিলা মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ও মাদ্রাসার উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান জৈন্তিয়া ইসলামিক সোসাইটি।No description available.
আজ ২৪ নভেম্বর মঙ্গলবার জৈন্তিয়া ইসলামিক সোসাইটি ও জৈন্তা জামেয়া ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি এডভোকেট আব্দুল আহাদ প্রেরিত এক প্রতিবাদ লিপিতে কমিটির সভাপতি এডভোকেট আব্দুল আহাদ, সহ-সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল খালিক ও সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুর রহমান এক যৌথ বিবৃতিতে এ ধরনের অসত্য, মিথ্যাতথ্য নির্ভর, কাল্পনিক, আজগুবী ও সিন্ডিকেটেড সংবাদ প্রকাশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।No description available.
বিবৃতিতে তারা বলেন, বিগত ২৩ নভেম্বর দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকার প্রিন্ট ভার্সনে “জৈন্তায় মাদ্রাসা নিয়ে বিরোধ”, দৈনিক প্রভাতবেলার অনলাইন ভার্সনে “জৈন্তাপুর মহিলা মাদ্রাসার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার এলাকাবাসী”, দৈনিক যুগভেরী পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে “জৈন্তিয়া জামিয়া ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসা : জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ” এবং অনলাইন মিডিয়া সিলেট প্রতিদিন ও এস এ নিউজে ‘জৈন্তা জামেয়া ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসার অর্থ আত্মসাৎ অভিযোগে ফ‚সে উঠছে জনতা’ শীর্ষক উস্কানিমূলক, বিভ্রান্তিকর, কাল্পনিক, মানহানিকর, অসত্য ও ভিত্তিহীন কথামালা সাজিয়ে গোয়েবলসীয় কায়দায় সিন্ডিকেট সংবাদ প্রকাশিত হয়।
বিবৃতিতে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০০৭ সালে এলাকার কতিপয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গ মিলে জৈন্তিয়া ইসলামিক সোসাইটি গঠনপূর্বক উক্ত সোসাইটির মাধ্যমে জৈন্তাপুর উপজেলা সদরে জৈন্তা জামেয়া ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করি। সুদীর্ঘ ১৪ বছর যাবত মাদ্রাসার যাবতীয় কার্যক্রম প্রতিষ্ঠান পরিচালনাকারী ও উদ্যোক্তা সংস্থা জৈন্তিয়া ইসলামিক সোসাইটি পালন করে যাচ্ছে। সোসাইটির নামে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে নামের ছাড়পত্র গ্রহণ করা হয়েছে। এটা বেআইনী কোন প্রতিষ্ঠান নয়। সভা, সমিতি ও সংগঠন করা প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। এটি হরণ করার দায়িত্ব রাষ্ট্র কাউকে দেয়নি। সংবাদে নিবন্ধনহীন সংগঠনের কথা উল্লেখ করে জনমনে অমুলক ও ভিত্তিহীন প্রচারণার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জৈন্তিয়া ইসলামিক সোসাইটির নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, মাদ্রাসার কমিটি নিয়ে সদস্যদের মধ্যে কোন বিরোধ নেই। সোসাইটি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত এ প্রতিষ্ঠানের কমিটিতে কোন আভ্যন্তরীণ কোন্দলও নেই। সোসাইটি ও অত্র মহিলা মাদরাসার সাথে সম্পর্কহীন কতিপয় দুষ্কৃতিকারী ও ষড়যন্ত্রকারী মাদ্রাসা ধ্বংসের হীন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন। এ সকল সন্ত্রাসীরা মাদ্রাসা শিক্ষা বিরোধী এক অপশক্তি। এখন করোনার বন্ধকালীন সময় চর দখলের মত মাদ্রাসা দখল করতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে এবং সরলমনা এলাকাবাসীর মধ্যে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, কমিটির সভাপতি এডভোকেট আব্দুল আহাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা। এতে সত্যের লেশমাত্রও নেই। বরঞ্চ মাদ্রাসা কমিটি অর্থ আত্মসাৎ, বিশৃংখলা, দুর্নীতি ও অসদাচরণ সহ বিভিন্ন অভিযোগে প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুল গাফফার কে গত ১৯/০৯/২০২০ ইংরেজি তারিখে বহিষ্কার করা হয়। দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী ও চরিত্রহীন আব্দুল গাফফারের বরখাস্তের বিষয়টি কমিটি লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শিক্ষা অফিস সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অবগত করে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১৫ নভেম্বর জৈন্তাপুরে সন্ত্রাসের গডফাদার ভূমিখেকো আখলাকুল আম্বিয়ার প্ররোচনায় ও ইন্ধনে বখাটে সন্ত্রাসী হানিফ আহমদ, সদ্য বহিষ্কৃত শিক্ষক সন্ত্রাসী ও চোরাচালানীর সাথে জড়িত মর্মে অভিযুক্ত গোলাম কিবরিয়া কে সাথে নিয়ে বহিষ্কৃত সুপার গাফফার মাদ্রাসা দখল করতে যায় এবং সরকারী কাজ ফাঁকি দিয়ে জনৈক সরকারী কর্মচারী এবং বখাটে হানিফ সেখানে অবস্থান করে গাফফার কে অনৈতিক কর্মকান্ডে সহযোগিতা করে। এ সময় গাফফার তার সহযোগী সদ্য বহিষ্কৃত অনারারী শিক্ষক ও অফিস সহকারী গোলাম কিবরিয়ার সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র, দলিল দস্তাবেজ ও অফিসিয়াল ডকুমেন্ট নিয়ে যায়।
বরখাস্তকৃত সুপারের এমন কর্মকান্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদা পারভীন কে অবগত করলে তিনি মোবাইল ফোনে কড়া ভাষায় গাফফার কে শাসিয়ে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে যেতে নির্দেশ দেন ও তাকে মাদ্রাসায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন এবং অবিলম্বে কমিটির কাছে মাদরাসার হিসাব সহ যাবতীয় কাগজপত্র সমজিয়ে দিতে নির্দেশ দেন। সেই সাথে সন্ত্রাসের গডফাদার আখলাকুল আম্বিয়া,বখাটে হানিফ গংদের মাদ্রাসায় নিয়ে যেতে নিষেধ দেন।
বিবৃতিতে কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেন, মাদ্রাসার উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস প্রতিষ্ঠানের কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত সুপারের সাময়িক দায়িত্ব প্রদান করতে কমিটির সভাপতি এডভোকেট আব্দুল আহাদ কে লিখিতভাবে অনুরোধ জানায়। কমিটি প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মাওলানা আনোয়ার হোসেন কে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দিলে গত ১৮ নভেম্বর রাতের অন্ধকারে আখলাকুল আম্বিয়ার প্ররোচনায় ও ইন্ধনে সন্ত্রাসী গাফফার, হানিফ ও কিবরিয়া গং ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা আনোয়ার হোসেন কে অপরণের চেষ্টা করে এবং জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করতে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ও উত্তেজিত জনতা সন্ত্রাসী হানিফ, গাফফার ও কিবরিয়া গং কে আটক করে। পরে পুলিশ তাদের কে উদ্ধার করে।
কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেন, আখলাকুল আম্বিয়া মাদ্রাসা কমিটির সদস্য কিংবা কোন শিক্ষার্থীর অভিভাবকও নয়। তিনি জোরপূর্বক মাদ্রাসা দখল কাজের চেষ্টায় জড়িত একজন বহিরাগত ব্যক্তি। হানিফ একজন বখাটে কর্মহীন বেকার যুবক। এ সকল সন্ত্রাসীদের মাদ্রাসা দখলের পায়তারা নতুন কিছু নয়। বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২১ নভেম্বর এ দখলকারি সন্ত্রাসীচক্র গোপনে মাদ্রাসা দখল করতে চাইলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ও বাঁধার মুখে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারেনি। সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয় জৈন্তা মাদ্রাসার অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে এলাকাবাসী সোচ্চার। এটি ডাহা মিথ্যা। বরঞ্চ মাদ্রাসা দখলে পেরে উঠতে না পেরে আখলাকুল আম্বিয়া ও হানিফ চক্র মাদ্রাসা থেকে অনেক দূরে সহজ-সরল কিছু লোকজনকে ভুল বুঝিয়ে এক স্থানে বেআইনী সমাবেশ করে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আখলাকুল আম্বিয়া ও হানিফ গংদের মাদ্রাসা বিরোধী কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানান। চক্রকর্তৃক জৈন্তা জামেয়া ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসার মত একটি স্বনামধন্য প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান দখলের নানামুখী ষড়যন্ত্রে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, সংবাদপত্র হলো সমাজের দর্পণ। সাংবাদিকরা জাতির জাগ্রত বিবেক। তারা বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক তথ্য নির্ভর সংবাদ প্রকাশে সংবাদকর্মীদের আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহবান জানান।