এলিমিনেটরে বরিশালকে হারিয়ে ফাইনালে উঠার সিঁড়ি পেয়েছিল বেক্সিমকো ঢাকা। কিন্তু আজ দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার নামের সেই সিঁড়িতে পিছলে পা ভেঙেছে ঢাকার। ছিটকে পড়েছে টুর্নামেন্ট থেকে। মুশফিকের ঢাকাকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম জিতেছে ৭ উ্টকেটে। আগামী ১৮ ডিসেম্বর শুক্রবারের ফাইনালে মোহাম্মদ মিঠুনের চট্টগ্রাম মুখোমুখি হবে জেমকন খুলনার। যারা প্রথম কোয়ালিফায়ারে এই চট্টগ্রামকে হারিয়েই উঠেছে ফাইনালে।
প্রথমে ব্যাট করে সবকটি উইকেট হারিয়ে মাত্র ১১৬ রান করতে পারে ঢাকা। চট্টগ্রাম এই রান টপকে গেছে ৭ উইকেট হাতে রেখে, ৫ বল বাকি থাকতে।
আজকের এই হারের জন্য ঢাকার ব্যাটসম্যানেরাই উঠবেন কাঠগড়ায়। চট্টগ্রামের বোলারদের অবশ্য খাটো করে দেখার উপায় নেই। তবে তাদের দুর্দান্ত বোলিং সত্ত্বেও প্রথমে ব্যাট করা ঢাকা মাত্র ১১৬ রানে আটকে যাওয়ার জন্য তারা নিজেরাই দায়ী। ঢাকার কোনো ব্যাটসম্যানই দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করতে পারেননি। এমনকি অধিনায়ক মুশফিকও না।
আগের দিন বরিশালের বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে সতীর্থ নাসুম আহমেদকে দুদুবার মারার জন্য তেড়ে গেছেন ঢাকার অধিনায়ক মুশফিক। পরে ওই ঘটনার জন্য অবশ্য ক্ষমা চেয়েছেন সতীর্থের কাছে। কিন্তু ওই ঘটনার রেশ যে দলের মধ্যে ভালোমতোই পড়েছিল, সেটি আজ তাদের ব্যাটিংয়েই বোঝা গেছে। কারো শট নির্বাচনই নিখুঁত ছিল না। বরং ঢাকার বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানই আজ আউট হয়েছেন ভুল শট খেলে। অবশ্য বোলিংয়ের পাশাপাশি চট্টগ্রামের ফিল্ডিংও দারুণ হয়েছে। বিশেষ করে নাঈম শেখ ও মুশফিকের ক্যাচ দুটি অসাধারণ দক্ষতায় রুখে নিয়েছেন চট্টগ্রামের দুই ফিল্ডিার নাদিফ চৌধুরী ও রাকিবুল হাসান। এই দুটি দুর্দান্ত ক্যাচই মূলত ঘুরিয়ে দিয়েছে ম্যাচের মোড়।
১১৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় চট্টগ্রাম তেমন তাড়াহুড়ো করেনি। লিটন দাস ও সৌম্য সরকার উদ্বোধনী জুটিতে তুলে ফেলেন ৪৪ রান। সৌম্য ২৩ বলে ২৭ রান করে ফিরে যাওয়ার পর অধিনায়ক মিঠুনের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে ধীর পায়ে জয়ের দিকে নিয়ে যান টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লিটন দাস। তবে অলিখিত সেমিফাইনাল। সেখানে একটু নাটক না হলে চলে! শেষের সেই নাটক মঞ্চস্থ করতেই কিনা দলকে ১০১ রানে রেখে আউট হয়ে যান লিটন দাস। ৪৯ বলে ৪০ রান করে ফিরে যান তিনি। এরপর অধিনায়ক মিঠুন ফিরে যান ৩৫ বলে ৩৪ রান করে।
দুই সেট ব্যাটসম্যানের যুগপত আউটে ম্যাচে একটু হলেও উত্তেজনা ফেরে। কারণ, মিঠুন আউট হওয়ার সময়ও জয়ের জন্য চট্টগ্রামের দরকার ছিল ১০ বলে ৯ রান! কিন্তু শামসুর রহমান ছক্কা মেরে সেই উত্তেজনায় জল ঢেলে চট্টগ্রামকে ৫ বল বাকি থাকতেই পাইয়ে দিয়েছেন জয়।
ঢাকার পক্ষে সর্বোচ্চ ২৫ রান করে করেন অধিনায়ক মুশফিক ও আল আমিন। তবে মুশফিক খরচ করেছেন ৩১ বল, আল-আমিন ১৮ বল। এছাড়া ইয়াসির আলি ২১ বলে করেছেন ২৪ রান। লো স্কোরিং এই ম্যাচে কে ম্যাচসেরা হবেন, সেটি নিয়ে একটু ধোয়াশাই ছিল। বল হাতে চট্টগ্রামের দুই পেসার শরিফুল ও মোস্তাফিজুর রহমান ভালো করেছেন। শরিফুল ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। মোস্তাফিজ ৩২ রান দিয়ে উইকেট নেন ৩টি। ফলে দুজনেই সমান দাবিদার ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত পুরষ্কারটা গেছে মোস্তাফিজের পকেটে।