দেশে বন্যায় পূর্বাভাস দিবে গুগল

বেশ কয়েক বছর ধরে মানুষকে বন্যার পূর্বাভাস সম্পর্কিত তথ্য জানাতে ও তাদেরকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে এমন সিস্টেমের বিকাশের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সরকারের সাথে গুগল ফ্লাড ফোরকাস্টিং ইনিশিয়েটিভ কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায়, বাংলাদেশে গুগল ফ্লাড ফোরকাস্টিং ইনিশিয়েটিভ চালু করতে সম্প্রতি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বিডব্লিউডিবি) এবং অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের অংশীদার হয়েছে গুগল। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবছরই বন্যা পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় ।

বর্তমানে বাংলাদেশের ৪ কোটি মানুষ গুগলের কাছ থেকে বন্যার পূর্বাভাস পেয়ে থাকেন, তবে সারা দেশের মানুষ যাতে বন্যার পূর্বাভাস পায় সে লক্ষ্যে কাজ করছে গুগল। এখন পর্যন্ত, সারা দেশের বন্যা কবলিত মানুষের কাছে প্রায় ১০ লাখ নোটিফিকেশন পাঠিয়েছে গুগল।

এ নিয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, “বাংলাদেশ বন্যাপ্রবণ দেশ। বহু বছর ধরেই বন্যার কারণে এ দেশের মানুষ ব্যাপকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। চলতি বছর, দেশের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি অঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে এবং এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশের পঞ্চাশ লাখের অধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমতাবস্থায়, বন্যা পরিস্থিতিতে মানুষকে আগাম সতর্কতা দেয়ার মাধ্যমে সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে ফ্লাড ফোরকাস্টিং ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে, বন্যাকালীন সময়ে চ্যালেঞ্জ উত্তরণে বিডবিøউডিবি-এটুআই-গুগলের যৌথ ফ্লাড ফোরকাস্টিং ইনিশিয়েটিভ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে যমুনা-পদ্মা নদী সংলগ্ন ১৪টি জেলায় ইনানডেশন মডেলিং সিস্টেম চালু করেছে। এখন পর্যন্ত আমাদের পার্টনারশিপ যেভাবে বাংলাদেশের মানুষকে সাহায্য করছে তাতে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আগামী দিনগুলোতে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি থেকে মানুষকে রক্ষা করতে গুগলের সাথে এ অংশীদারিত্ব ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।’

এদিকে বাংলাদেশ সরকারের এটুআই প্রোগ্রামের নীতিমালা উপদেষ্টা আনীর চৌধুরী বলেন, প্রাথমিক ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের মতো বন্যাপ্রবণ দেশে বন্যার পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে এই সিস্টেমটির সম্ভাবনা দেখে আমরা বেশ আশাবাদী। বাংলাদেশ সরকারের ফ্ল্যাগশিপ ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন প্রোগ্রাম হিসেবে এটুআই প্রত্যন্ত এলাকায় এই সিস্টেমটি পৌঁছে দিতে গুগল এবং বিডব্লিউডিবি’র সাথে আরো বিস্তৃত পরিসরে কাজ করার পরিকল্পনা করছে।’

অ্যালার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে গুগল ইতিবাচক অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে, প্রতিষ্ঠানটিকে এখনো অনেক প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হবে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর কাজ বিলম্বিত হয়েছে, ফ্রন্ট লাইনার ও চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতদের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে এবং ইন-পারসন নেটওয়ার্কে ব্যাহত হয়েছে। এই ইন-পারসন নেটওয়ার্কের মাধ্যমেই অনেক মানুষ বন্যার পূর্বাভাস সংক্রান্ত আগাম নোটিশ পাওয়ার ওপর নির্ভরশীল।

এই সিস্টেমটিগুলোকে শক্তিশালী করতে সামনে আরো কাজ করতে হবে, যাতে করে বিপুল সংখ্যক বিপন্ন মানুষ এর ওপর নির্ভর করতে পারে বন্যা কবলিত অঞ্চলের আরো মানুষের কাছে সেগুলো পৌঁছে যেতে পারে। এই মানুষগুলোকে রক্ষা এবং তাদের জীবন বাঁচাতে প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল সরঞ্জামগুলোর বিকাশ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং উন্নতিসাধনে গুগল তার অংশীদারদের সাথে কাজ করে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *