করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নতুন ধরনের প্রজাতির সংক্রমণ এখন বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে। নতুন ধরনের এই করোনা ব্রিটেন, ফ্রান্স, স্পেন, সুইডেনসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে এবং চীন, জাপান, কোরিয়া ও ভারতসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
গবেষণায় জানা গেছে, এই করোনাভাইরাস আগের করোনার চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি ছড়ায়। সে ক্ষেত্রে মহামারির এক ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে বর্তমান বিশ্ব।
আর এরই মধ্যে আয়োজন করা হয় ইংরেজি নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার। ফলে অনেক দেশে লকডাউনের ও স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে নববর্ষের আয়োজন করায় আতশবাজি ও উচ্চ শব্দদূষণে বিশ্বজুড়ে কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় শতাধিক।
শুক্রবার নিউ ইয়ারের উৎসবে বসনিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি কটেজে ৮ জন পুরুষ এবং এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে দেশটির পুলিশ জানিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কার্বন মনোঅক্সাইড বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।
একটি জরুরি ফোনকল পেয়ে ত্রিবিসটোভো শহরের একটি বাড়িতে গিয়ে তারা বেশ কিছু মরদেহ উদ্ধার করেন। বসনিয়া ও ক্রোয়েশিয়ার গণমাধ্যম জানিয়েছে, নিহত আটজনই শিক্ষার্থী।
অপরদিকে, তুরস্কে আতশবাজিতে চোখে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন নরওয়ের ফুটবলার ওমর এলাবদেলাউয়ি। আঙ্কারার লিভ হসপিটালের চিকিৎসক ডা. ভেদাত কায়া জানিয়েছেন, তার দুই চোখেই আঘাত লেগেছে। তিনি জানিয়েছেন, ওই ফুটবলারের চোখ নষ্ট হয়নি। তবে তার একটি চোখের আঘাত গুরুতর।
এদিকে ফ্রান্সের পূর্বাঞ্চলে আতশবাজি বিস্ফোরণে ২৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া জার্মানিতে বাড়িতে তৈরি আতশবাজি বিস্ফোরণে ২৪ বছর বয়সী এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে।
জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলীয় ওসনাব্রুয়েক শহরে আরও একটি ঘটনায় আতশবাজি বিস্ফোরণে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তার জীবন সংকটাপন্ন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। ওই ঘটনায় আরও দু’জন আহত হয়েছেন।
ইরাকের এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশটিতে নিউ ইয়ারের উৎসবে আতশবাজির কারণে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় কমপক্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও ২৫ জন আহত হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে গণজমায়েত ও আতশবাজি-সহ বিভিন্ন কার্যক্রমে সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ইরাকের বিভিন্ন স্থানে তা অমান্য করেই উৎসব করেছে মানুষ।
এছাড়া লকডাউনের মধ্যে ইংরেজি নতুন বছরকে বরণ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় ইতালিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন ৮০ জনেরও বেশি। সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৪৮ জনকে। এছাড়াও ১৮০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
পূর্ণ লকডাউনের মধ্যেই ইতালির বিভিন্ন প্রদেশে ব্যাপক আতশবাজির প্রদর্শন করা হয়। এতে ঘটে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা। লোকসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও সমাবেত হয় বহু মানুষ। আতশবাজির শব্দে রোমে বিপুলসংখ্যক পাখি মারা গেছে, যা এবারই প্রথম।