পরীক্ষা ছাড়া ফল প্রকাশে তিন বিল সংসদে

বিশেষ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়া মাধ্যমিক (এসএসসি), উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসএসি) ও সমমান পাসের সনদ দেওয়ার সুযোগ রেখে আইন সংশোধন করা হচ্ছে।

এ জন্য আজ মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট তিনটি আইনের সংশোধনী জাতীয় সংসদে তোলা হয়েছে।

সংশোধনীগুলো পাস হলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়া ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের ফলাফল ঘোষণা এবং পাসের সনদ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি কোনো বাধা থাকবে না।

জাতীয় সংসদে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১ ’, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১’ ও ‘বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১’ উত্থাপন করেন।

পরে ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন বিলটি এক দিনের মধ্যে এবং বাকি দুটি বিল দুই দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থীর ২০২০ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে এই পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইসের সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়।

গত বছরের অক্টোবরের শুরুর দিকে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানান, পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনীর মতো এইচএসসি-সমমানের পরীক্ষাও নেওয়া যাচ্ছে না। এসব শিক্ষার্থীর জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে এইচএসসির মূল্যায়ন করা হবে।

বিল তিনটির উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনে বিশেষ পরিস্থিতে অতিমারি, মহামারি, দৈব–দুর্বিপাকের কারণে বা সরকার কর্তৃক সময়-সময় নির্ধারিত কোনো অনিবার্য পরিস্থিতিতে কোনো পরীক্ষা গ্রহণ, ফল প্রকাশ ও সনদ দেওয়া সম্ভব না হলে সে ক্ষেত্রে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা কোনো বিশেষ বছরে শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা ছাড়া বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণ করে ওই প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন ও সনদ প্রদানের জন্য নির্দেশাবলি জারি করার বিষয় উল্লেখ রয়েছে।

ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১ উত্থাপন নিয়ে সংসদে আপত্তি জানান জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ সাংসদ ফখরুল ইমাম। নিয়ম অনুযায়ী সংসদে উত্থাপনের আগে নোটিশ না পাওয়ায় তিনি এই আপত্তি জানান।

এ বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বক্তব্য নিয়েও আপত্তি জানান তিনি। পরে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী তার অনুমোদন নিয়ে বিলটি তোলা হয়েছে বলে জানান।

সংসদে ডা. দীপু মনি বলেন, এই বিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এইচএসসি ফলাফলের জন্য শিক্ষার্থী-অভিভাবক সবাই অপেক্ষা করছেন এবং আমাদের ফলাফল সব প্রস্তুতও আছে। কিন্তু যেহেতু আইনে পরীক্ষা গ্রহণপূর্বক ফলাফল দেবার বিষয়টি ছিল। এবার যেহেতু বৈশ্বিক সঙ্কটের কারণে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। আমরা বিকল্প একটি পদ্ধতিতে আগের দুটি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এই ফলাফল দিতে যাচ্ছি। সে কারণে বর্তমান আইনটি সংশোধন করার প্রয়োজন দেখা দেয়। সে কারণে এটি আনা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *