বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি বাসভবনে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় সরকারি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বিবৃতির সঙ্গে সচিবসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা একমত নন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সচিবালয় থেকে বৈঠকে যুক্ত ছিলেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ‘তারা বলেছেন, এটি ভুল হয়েছে। গতকাল রোববার এক সভায় উপস্থিত সচিব ও বিভাগীয় কমিশনাররা ওই মত দিয়েছেন।’
গত বুধবার বরিশালে পোস্টার অপসারণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউএনওর বাসায় হামলা ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বরিশালের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে প্রধান আসামি করে মামলা হয়। আবার পরে ইউএনও এবং পুলিশের বিরুদ্ধেও পাল্টা নালিশি মামলার আবেদন করা হয়।
হামলার ওই ঘটনার পর প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন কড়া ভাষায় বিবৃতি দেয় এবং এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গতকাল একটি সভা ছিল। এ নিয়ে যখন কথা হয়, তখন উপস্থিত সচিব ও বিভাগীয় কমিশনাররা ওই বিবৃতির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। এটা উচিত হয়নি। তারা বলেছেন, এটা ভুল হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা তো আমরা ক্লোজলি অবজার্ব করছি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা দেখছি যে একটা মিস কমিউনিকেশন থেকে এগুলো শুরু হয়। সেটাই ইন্সট্রাকশন দিয়ে দেয়া হয়েছে মাঠ পর্যায়ের সবাইকে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকেও বলে দেয়া হয়েছে, ক্যাবিনেট থেকেও বলে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিংবা জনপ্রতিনিধি সবাইকে বলা হয়েছে- আপনারা নিয়মিত ইন্টারঅ্যাকশন করবেন। ইন্টারঅ্যাকশন যেখানে কম হয়, সেখানেই এই ধরনের মিস কমিউনিকেশনের বিব্রতকর ঘটনাগুলো ঘটে।
খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, বরিশালের ঘটনা এক্সাক্টলি কী, আমরা জানি না। বলা হয়েছে আপনারা নিজেরা আগে বসেন। বসে দেখেন কী সমাধান করা যায়। আপনারা সমাধান করতে না পারলে, আইন তো আছেই। আপনারা দেখেন এসব ঘটনা কেন ঘটছে?
এছাড়া সভায় ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (বেতন এবং সুবিধাদি) আইন ২০২১’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন এবং ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ভ্রমণ-ভাতা) আইন,২০২১’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। পাশাপাশি এদিনের মন্ত্রিসভায় ‘বাংলাদেশ লিগ্যাল প্রাকটিশনার এন্ড বার কাউন্সিল (সংশোধনী) আইন ২০২১’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয় বলেও মন্ত্রিপরিষদ সচিব উল্লেখ করেন।