1. hmgrobbani@yahoo.com : admin :
  2. news@soroborno.com : Md. Rabbani : Md. Rabbani
  3. sayefrahman7@gmail.com : Sayef Rahman : Sayef Rahman
সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ০৬:২৬ অপরাহ্ন

বিদ্যুৎহীন সিলেটে রাত জেগে পাহারা ,পানির জন্য হাহাকার : জনদুর্ভোগে নগরবাসি

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২০

সুলতান সুমন::
সিলেটের কুমারগাঁওয়ে বিদ্যুতের গ্রিড উপকেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। টানা ৩ ঘণ্টার অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এই উপকেন্দ্রটির। এই কেন্দ্র থেকে সিলেট বিভাগের ৮০ ভাগ এলাকায় গতকাল দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল সিলেট। পুরো নগরী অন্ধকার থাকার কারণে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও অপরাধ মূলক কর্মকান্ড ঠেকাতে সক্রিয় ছিল এসএমপি পুলিশ। পুলিশের পাশাপাশি প্রত্যেকটি পাড়া মহল্লায় রাত জেগে পাহারাও দিয়েছেন স্থানীয় জনগণ এমনই তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা।

নগরীর বাসিন্দা ছাদেকুর রহমান জানান, বিদ্যুৎ না থাকার কারণে মোবাইল ব্যাংকিং ও এটিএম কার্ড ব্যবহারকারীরা চরম দুভোর্গে পড়েছেন। অনেকেই সময়মতো টাকা উত্তোলন করতে না পেরে পারিবারিক খরচ সহ নানা ধরণের সুযোগ-সুবিধা মেঠাতে বিপাকে পড়েছেন।

নগরীর বাসিন্দা নাজনিন আক্তার জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় পানির জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম করা যাচ্ছে না। যাতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

মিরাবাজার আগপাড়ার বাসিন্দা শারমিন আক্তার জানান, পানির জন্য রান্না-বান্না ও প্রয়োজনীয় কার্যক্রম করা যাচ্ছে না। এমনকি খাওয়ার পানিও বেশি দাম দিয়ে ক্রয় করে খেতে হচ্ছে।

আম্বরখানা এলাকার বাসিন্দা হাফিজুর রহমান জানান, বিদুৎ না থাকায় মোমবাতি ক্রয় করে তা ব্যবহার করতে হচ্ছে। কিন্তু সেই মোমবাতির দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ৫ টাকা দরের বাতি ১০ টাকা দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।

এদিকে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে গতকাল দুপুর থেকে দুর্ভোগ শুরু হয়। পানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। কবে নাগাদ সিলেটে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে সেটি নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাথাবিক হবে বলে তারা জানিয়েছে।
সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুতের গ্রিড উপকেন্দ্র্রটি ১৩২/৩৩ উপকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এই উপকেন্দ্র থেকে সিলেট বিভাগের চার জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ করে গ্রিড উপকেন্দ্রে শব্দ হয়। এর পরপরই বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ট্রান্সফরমারে আগুন দেখা যায়। তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা নিজেদের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। এরপরও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বরং আগুনের লেলিহান শিখা বাড়তে থাকে। পরপর দু’টি ট্রান্সফরমারে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। এতে করে কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে এই আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় আশেপাশের লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যান। খবর পেয়ে সিলেট ফায়ার ব্রিগেডের ৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। বেলা দেড়টার দিকে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। এর আগে অগ্নিকাণ্ডে গ্রিড উপকেন্দ্রের সিংহভাগ এলাকা পুড়ে যায়।
সিলেট ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক শওকত আহমদ জানিয়েছেন, সিলেট ফায়ার ব্রিগেডের ৭টি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। আগুনে গ্রিড উপকেন্দ্রের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি নিরূপণে বিদ্যুতের কর্মকর্তারা কাজ করছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে গ্রিড উপকেন্দ্র সূত্র জানিয়েছে, সিলেটের কুমারগাঁওয়ের এই গ্রিড উপকেন্দ্রটি সংরক্ষিত এলাকা। ফলে ভেতরে সবার অবাধ যাতায়াত নেই। যান্ত্রিক কোনো ত্রুটির কারণে অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগুনে ২৫/৪১ এমবিএ, মেগাবল্ট দু’টি ট্রান্সফরমার পুড়ে গেছে। একটি ট্রান্সফরমারের মূল্য প্রায় ৭০ কোটি টাকা। দু’টি ট্রান্সফরমার আর কোনো কাজ করবে না। সবক’টি সার্কিট ব্রেকার ও ৩৩ কেভি বারের কয়েকটি অংশ পুড়ে গেছে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা- অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ২০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সিলেট বিদ্যুৎ বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মোকাম্মেল হোসেন জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ কবে স্বাভাবিক হবে সেটি এখনই বলা মুশকিল। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের চেষ্টা চলছে। এরপরই জানা যাবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে।

এস এস

More News Of This Category
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি