মহামারি করোনাভাইরাসের কারেণ দেশে আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ায় সংক্রমণ আবারও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
কমিটির ৪৪তম অনলাইন সভা শেষে শুক্রবার (১৩ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ‘লকডাউন’ তুলে নেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জানানো হয়।
করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া বিধিনিষেধের বেশিরভাগই ১১ আগস্ট থেকে তুলে নেয়া হয়েছে।
সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি গণপরিবহন, অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান ও দোকানপাট ও শিল্পকারখানা চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ১৯ অগাস্ট থেকে পর্যটনকেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্রও খুলে দিচ্ছে সরকার।
কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাকে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৩ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত চলা লকডাউন কঠোরভাবে পালিত হয়নি। কিন্তু জনসমাবেশ হওয়ার মতো বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় সংক্রমণ হারে উন্নতি দেখা গেছে। তবে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কোনোটাই স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আসেনি। এ অবস্থায় সাম্প্রতিককালে সরকারের দ্রুত বিধিনিষেধ শিথিল করার, তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তে জাতীয় কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
‘জীবিকা ও দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখার’ সরকারের দায়িত্ব স্বীকার করলেও কমিটি মনে করে, বিধিনিষেধ শিথিল করার ক্ষেত্রে সরকার তাড়াহুড়ো করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এর ফলে সংক্রমণ আবার বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা বাড়তে পারে, তাতে অর্থনীতি আরও বেশি হুমকির মুখে পড়বে।
সরকারের গৃহীত সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুপারিশ করে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি বলছে, চলমান লকডাউন আরও এক থেকে দুই সপ্তাহ চলমান রাখতে পারলে সুফল পুরোপুরি পাওয়া যেত। অন্তত সভা-সমাবেশ, সামাজিক অনুষ্ঠান, পর্যটন-বিনোদন কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার ইত্যাদি আরও কিছুদিন বন্ধ রাখার সুপারিশ করেছে জাতীয় কমিটি।
এছাড়াও বেশ কিছু ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনার সুপারিশ করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা না রেখে কেবলমাত্র বিক্রি করার অনুমতি দেয়া; সক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলাচল; যেক্ষেত্রে সম্ভব বাড়িতে বসে কাজ করা ও অনলাইন সভা/কর্মশালা/প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রেখে অফিস খোলা রাখা; অফিস, আদালত, ব্যাংক, দোকানপাট, বাজার খোলার শতভাগ সঠিকভাবে তিন লেয়ার বিশিষ্ট মাস্ক পরার নিশ্চিত করা না গেলে বন্ধ রাখা;
এছাড়া সকল ক্ষেত্রে শতভাগ সঠিকভাবে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাসহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দিয়েছে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।