1. hmgrobbani@yahoo.com : admin :
  2. news@soroborno.com : Md. Rabbani : Md. Rabbani
  3. sayefrahman7@gmail.com : Sayef Rahman : Sayef Rahman
সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ০৮:০৪ অপরাহ্ন

বিশ্বনবীর (সা.) আদর্শ অবলম্বনের মাঝেই শান্তি

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১

গোটা বিশ্বজগতে আল্লাহতায়ালা যাকে সবচেয়ে উন্নত ও মহান গুণাবলী ও অনন্য বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করেছেন তিনি হলেন শ্রেষ্ঠনবী হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.)। যার প্রশংসায় স্বয়ং আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয় তোমাদেরই মাঝ থেকে এক রাসুল তোমাদের কাছে এসেছে। তোমাদের কষ্ট ভোগ করা তার কাছে অসহনীয় এবং সে তোমাদের কল্যাণের পরম আকাক্সক্ষী। সে মুমিনদের প্রতি অতি মমতাশীল ও বার বার কৃপাকারী’ (সুরা আত তাওবা, আয়াত:১২৭)।

এটি সেই গুণ এবং আদর্শ যার ভিত্তিতে তার মাঝে বিনয়, নম্রতা এবং প্রতিশোধের পরিবর্তে মার্জনা এবং উপেক্ষা করার বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হয়েছে। এটিই সেই দারিদ্রতার মাঝেও গৌরবের পরিচয়, তিনি এক ব্যক্তিকে যে মহানবীর (সা.) প্রভাব ও শক্তির ভয়ে ভীত হয়ে কাঁপছিল, সেসময় মহানবী (সা.) তাকে বলেন, এত ভয় পেও না, আমি তো এমন এক মায়ের সন্তান যিনি শুকনো মাংসের টুকরো খেতেন।

এটিই সেই সহানুভূতি আর দয়া যার ফলে তিনি (সা.) একজন শ্রমিকের ঘর্মাক্ত শরীর জড়িয়ে ধরেন আর দারিদ্র ও কষ্টের জীবন বেছে নেন আর দোয়া করেন, আল্লাহ যেন তাকে দরিদ্র এবং অসহায়দের সাথে রাখেন আর তাদের মধ্য হতেই উত্থিত করেন।

আর এটি সেই মহান বৈশিষ্ট্য যার ভিত্তিতে তিনি (সা.) বলেছেন, আমাকে বিভিন্ন উপাধিতে ভূষিত করো না আমার উপাধি ‘আবদ’। আর এভাবে এই পার্থিব জগতের আকর্ষণ ও আকাঙ্খার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করেন। হে আমার আল্লাহ! শান্তি, আশিস ও কল্যাণ বর্ষণ কর মুহাম্মদ (সা.) এবং তার বংশধরদের প্রতি, নিশ্চয় তুমি মহা প্রশংসিত ও মর্যাদাবান।

শিশুকাল থেকেই তিনি (সা.) স্বল্পেতুষ্ট আর বিনয়ের উন্নত মানে অধিষ্ঠিত ছিলেন। হজরত উম্মে আইমন (রা.) বর্ণনা করেন, ‘আমি কখনোই মহানবীকে (সা.) ক্ষুৎপিপাসার জন্য অভিযোগ করতে শুনিনি।’

ইতিহাস সাক্ষী, মহানবী (সা.) সবচেয়ে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। তিনি কোন বস্তুর ভালো গুণাগুণ বর্ণনার পাশাপাশি যদি তার মধ্যে কোন খুঁত থেকে থাকে তাহলে তাও বলে দিতেন। খোদার ইচ্ছানুসারে তিনি (সা.) আরবের পবিত্র এবং ধনী নারী হজরত খাদীজাহর (রা.) সাথে সর্বপ্রথম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

হজরত খাদীজাহকে (রা.) বিয়ে করার সুবাদে তিনি (সা.) অঢেল ধন-সম্পদের মালিকানা লাভ করেন, কিন্তু তিনি বলেন, তিনি তা গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দিতে চান, তার পুণ্যবতী সহধর্মিণী একান্ত বিনয়ের সাথে তাতে সম্মতি প্রকাশ করেন আর বলেন, আপনি যেভাবে খুশী তা ব্যবহার করুন। এরপর তিনি (সা.) তা গরীবদের মাঝে বিলিয়ে  দেন।

অনুরূপভাবে এই বিয়ের ফলে সদাপ্রস্তুত সারি সারি কৃতদাসের দল তিনি লাভ করেন কিন্তু এই মানবদরদী রাসুল স্বীয় স্ত্রীকে বলেন, আমারই মত মানুষকে কৃতদাস বানিয়ে রাখা আমার পছন্দ নয়। তখন মহানবীর (সা.) অনুগতা স্ত্রী এসব কৃতদাসকে স্বাধীন করে দেয়ার অধিকার তাকে প্রদান করেন। ফলে তিনি (সা.) সকল কৃতদাসকে মুক্ত করে দেন। 

মানুষের হয় ধন-সম্পদের অহংকার থাকে অথবা বংশ মর্যাদার কিন্তু কতই না মহান আমাদের মহানবী (সা.), তিনি এত ধন-সম্পদ, অর্থ-কড়ি এবং চাকর-বাকর পাওয়া সত্তেও কখনো অহংকার বা গর্ব করেন নি বরং বিনয় ও নম্রতার একান্ত উন্নত এবং উত্তম আদর্শ স্বীয় অনুসারীদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন, সুবহানাল্লাহ।

দৈনন্দিন লেন-দেনের বেলায়, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, একজন দায়িইলাল্লাহ হিসেবে, একজন স্বামীর কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে. একজন পিতার দায়িত্ব পালনের  বেলায়, মহান ন্যায়বিচারক  হিসেবে,  মোটকথা যেকোন দিক থেকেই দেখা যাক না কেন তিনি কখনোই, ধৈর্য ও বিনয়ের আঁচল হাত ছাড়া  হতে দেন নি আর কখনোই অহংকার ও আত্মশ্লাঘাকে কাছে ঘেষতে দেন নি।

মহানবী (সা.) শান্তির ধর্ম ইসলামকে বিশ্ববাসীর মাঝে শান-শওকত, ঐশ্বর্য ও প্রতাপের সাথে তুলে ধরেছেন তা একান্ত বিনয় এবং নম্রতার বৈশিষ্ট্য নিজের মাঝে ধারণ করে, কোনোক্রমেই জোর-জবরদস্তি, উগ্রতা, অবজ্ঞা, ঘৃণা-বিদ্বেষের মাধ্যমে নয়।

আমরা যদি মহানবীর (সা.) জীবনাদর্শ অনুসরণ করে চলি তাহলে প্রতিটি পরিবার, প্রতিটি শহর এবং প্রতিটি দেশ হতে পারে শান্তিময়। তাই বিশ্বময় শান্তির সুবাতাস প্রবাহিত করার জন্য চাই বিশ্বনবী (সা.)-এর আদর্শ মতাবেক জীবন পরিচালনা করা।

আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে বিশ্বনবী (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করে চলার তৌফিক দান করুন, আমিন।

লেখকইসলামী গবেষক  কলামিস্টমেইল– masumon83@yahoo.com

More News Of This Category
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি