ভাই, আমার কাছে আর সামান্য কিছু টাকা আছে, আরও ৫০০ টাকা বেশি দিমুনে। দয়া করে পোলাডারে মিটফোর্ড হাসপাতালে নামাইয়া দেন।’ অ্যাম্বুলেন্স চালকের কাছে এভাবেই আকুতি করছিলেন হারুনুর রশীদ। ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ১০ বছরের ছেলে সাকিবকে তিন হাসপাতালে ভর্তি করতে না পেরে চতুর্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স চালকের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন তিনি।
কিন্তু ওই চালকের ঝাঁঝালো উত্তর, ‘এমনিতেই ভাড়া কম দিয়া আইছেন, তিনটা হাসপাতালে ঘুরে অনেক সময় নষ্ট করছেন। এক হাজার টাকায় গেলে চলেন, না হইলে অ্যাম্বুলেন্স থেকে রোগী নামান, কম টাকায় পারলে অন্য অ্যাম্বুলেন্স নিয়া যান।’
সোমবার (২ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-২ এর (করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল) জরুরি বিভাগের সামনে এমন দৃশ্যের অবতারণা হয়।
রাজধানীর টঙ্গীর বাসিন্দা হারুনুর রশীদ পেশায় একটি ইলেকট্রিক দোকানের কর্মচারী। চার-পাঁচদিন ধরে তার ছেলে সাকিব জ্বরে ভুগছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সোমবার টঙ্গীর একটি হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। পরীক্ষায় ডেঙ্গুজ্বর শনাক্ত হয়। চিকিৎসকরা তখন হারুনকে জানান, রোগীর অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছে। তাকে দ্রুত ঢাকার কোনো হাসপাতালে নিয়ে যান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-২ এর (করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল) জরুরি বিভাগের সামনে হারুনুর রশীদ বলছিলেন, ‘করোনার কারণে দোকান বন্ধ থাকায় আয়-রোজগার নেই। পরিচিতজনদের কাছ থেকে ঋণ করে স্ত্রী, শিশুকন্যা ও শাশুড়িকে সঙ্গে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকায় রওনা হই। সকাল থেকে সরকারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঢামেক হাসপাতাল হয়ে ঢামেক হাসপাতাল-২ এ আসি। চিকিৎসকরা জানান, আমরা যে হাসপাতালগুলোতে গিয়েছি সেগুলোতে ডেঙ্গু নয়, করোনা রোগী ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা দ্রুত আমাদের মিটফোর্ড হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন।’
সূত্রঃ জাগো নিউজ