দ্বিতীয় দফায় স্বেচ্ছায় যেতে আগ্রহী এমন ১৮০৪ জন রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৯টায় চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর বোট ক্লাব সংলগ্ন জেটি থেকে জাহাজগুলো ছেড়ে যেতে শুরু করে।
ভাসানচর রোহিঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নৌবাহিনীর কর্মকর্তা কমডোর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মঙ্গলবার সকালে ভাসানচরে নিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়েছে নৌবাহিনী। চট্টগ্রামে সকাল ৮টা থেকে এ সকল রোহিঙ্গাকে নৌবাহিনীর জাহাজে তোলা হয়। যা বিভিন্ন টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারও করা হয়েছে।
সকাল ১০টার মধ্যে নৌবাহিনীর ৭টি জাহাজ রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভাসানরের উদ্দেশে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ত্যাগ করবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়।
চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের বলেন, তাদের ধারণার চেয়ে বেশি লোক দ্বিতীয় দফায় ভাসানচরে যাচ্ছে। ১২শর মতো লোক যাবে বলে ধারণা করলেও শেষ পর্যন্ত এক হাজার ৮০৪ জন ভাসানচরে যাচ্ছে স্বপ্রণোদিত হয়ে।
চট্টগ্রাম থেকে তাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ছয়টি জাহাজে করে। দুপুর নাগাদ তাদের ওই দ্বীপে গড়ে তোলা আশ্রয়ন প্রকল্পে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
এর আগে সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ৩০টি বাসে করে রোহিঙ্গাদের চট্টগ্রামে আনা হয়।
উখিয়ার স্থানীয়রা জানান, রোববার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে অনেক রোহিঙ্গাকে উখিয়ার কুতুপালং সংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। আবার অনেককে সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে আনা হয়। রাতে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে জড়ো করা হয় যাত্রীবাহী বাস। সেখান থেকে সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ৩০টি বাস তাদের নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আসার বিষয়ে জানানোর পর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।’
এর আগে পুলিশের ঊধর্বতন কর্মকর্তারা ভাসানচর পরিদর্শন করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান এসপি।
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নিয়ে থাকা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে দুই বছর আগে তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসান চরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।
সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।