কোনো ভাস্কর্য তৈরি হলে তা টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী।
শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী পার্বতী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাবুনগরী বলেন, ‘আমি কোনো রাজনৈতিক দলের নাম নেব না। যারা ভাস্কর্য তৈরি করবে, টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেয়া হবে। আমার বাবার নামেও যদি কেউ ভাস্কর্য তৈরি করে, টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেব।’
আল আমিন সংস্থা নামের একটি সংগঠন এ মাহফিলের আয়োজন করে। সংগঠনটির বেশির ভাগ নেতা-কর্মী হেফাজতে ইসলামের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
মাহফিলে প্রধান বক্তা থাকার কথা ছিল হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের। কিন্তু তিনি উপস্থিত ছিলেন না। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ায় মামুনুল হককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় জঙ্গিবাদবিরোধী ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদ। তাই এ মাহফিল ঘিরে আশপাশের এক কিলোমিটার এলাকা পুলিশি পাহারা ছিল।
প্রশাসনের অনুরোধে মামুনুল হক ঢাকায় ফিরে গেছেন বলে মাহফিলে জানান জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। সংঘাত চাই না। মামুনুল হকও সমাবেশে আসতে আগ্রহী ছিলেন না। আমরা তাঁকে আনতে আগ্রহী নই। কিন্তু তারপরও কিছু কুচক্রী হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন স্থানে মামুনুল হকের কুশপুত্তলিকা দাহ ও অশ্লীল স্লোগান দিয়েছে। এটি একজন আলেমের সঙ্গে বেয়াদবি।’
জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, বর্তমান পুরো বিশ্বে আস্তিক আর নাস্তিকের লড়াই চলছে। আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে কোনো লড়াই নেই, শুক্রবারের জুমার নামাজে তারাও পাশাপাশি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পরস্পরের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন হয়, মুসলমান হিসেবে সবাই ভাই ভাই। কিন্তু আস্তিক আর নাস্তিক কখনো এক হতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন মদিনার সনদে দেশ চলবে। প্রধানমন্ত্রীর এ কথার সঙ্গে সহমত পোষণ করছি। আমরাও চাই মদিনার সনদে দেশ চলুক।’
মাওলানা মামুনুল হককে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাহফিলে বাধা দেয়ার প্রতিবাদে শুক্রবার ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটার নিন্দা জানান হেফাজতে ইসলামের আমির।
তিনি বলেন, তৌহিদি জনতার ওপর এমন লাঠিপেটা বড়ই দুঃখজনক। বিক্ষোভ মিছিল থেকে গ্রেফতার লোকজনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি না দিলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিতে হেফাজতে ইসলাম বাধ্য হবে।