সুহেল আরমান :: সুনামগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার ইসলামগন্জ ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাজিনুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীগণ মিলিত হয়ে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়,অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) মো.সাজিনুর রহমান সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচি ২০২০-২০২১ ইং সনের ইসলামগন্জ ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির আনুমানিক ২৭৪ জন শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির জন্য তালিকাভুক্ত করেন এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ ৫০০ টাকা করে অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) এর নিকট প্রদানের জন্য বলেন।যেহেতু সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচি অনুযায়ী কোনও শিক্ষার্থীর নিকট থেকে অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) টাকা নেওয়ার কোনও সরকারি বা বেসরকারি বিধি বা নিয়ম নীতি নেই সেহেতু একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীবৃন্দ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে অধ্যক্ষ ভারপ্রাপ্ত বিভিন্ন ভাবে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।পরবর্তীতে একাদশ শ্রেণির সব শিক্ষার্থী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ ৫০০ টাকা অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) এর নিকট প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি জানান,ইসলামগন্জ ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি,আগামী ২৩ জুন গভর্নিং বডির সভা অনুষ্ঠিত হবে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত ইসলামগন্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) মো.সাজিনুর রহমান এর সহিত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করিলে বলেন-অফিসিয়াল খরচ বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলে স্বীকার করেন।তিনি আরো বলেন-উক্ত বিষয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে,সেই কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৫০০ টাকা করে নেওয়ার জন্য কিন্তু ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে কে কে রহিয়াছেন এ ব্যাপারে তিনি কারো নাম উল্লেখ করেন নাই।
এ বিষয়ে উক্ত কলেজের গভর্নিং বডির কোনও কোনও সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধির সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করিলে তারা জানান,প্রতি শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ৫০০ টাকা করে অনুমান ১ মাস পূর্বে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মহোদয় নিয়েছেন।
পরবর্তীতে শিক্ষার্থীগণ সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী অফিসার মহোদয় বরাবরে অভিযোগ দায়েরের পর তাড়াহুড়ো করে ১ মাস পর অধ্যক্ষ তাঁহার মনোনীত লোকদের নিয়ে ৫ সদস্য বিশিস্ট কমিটি গঠন করেন।
পরবর্তীতে বিগত ২৩ জুন ২০২১ ইংরেজী তারিখে সুনামগন্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতিতে ইসলামগন্জ ডিক্রি কলেজের গভর্নিং বডির সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় রেজুলেশন হিসাবে ২নং সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
তাহা নিম্নরুপ——-
ইসলামগন্জ ডিক্রি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সভায় বলেন, একাদশ শ্রেনীর ছাত্র/ছাত্রী উপবৃত্তি প্রদান বাবদ তাদের কাছ থেকে ৫০০/- ( পাঁচ শত) টাকা অধ্যক্ষ ( ভারপ্রাপ্ত) আদায় করেন মর্মে একটি অভিযোগ পাওয়া গিয়াছে যা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক প্রশ্ন করলে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তাদের জানানো হয়েছে।২৩/০৬/২০২১ ইং তারিখে গভর্নিং বডির সভায় টাকা আদায়ের বিষয়ে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) এর কাছ থেকে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।
অধ্যক্ষ ( ভারপ্রাপ্ত) বলেন যে, শিক্ষকদের সম্মানী প্রদানের জন্য বিধি মোতাবেক একটি কমিটি গঠন করে উক্ত কমিটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অর্থ আদায় করা হয়। উল্লেখিত বিষয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটির প্রস্তাব করা হলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সুনামগঞ্জ সদর কে প্রধান করে ০৩ (তিন) সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রধান উনার মনোনীত ০২ (দুই) জন সদস্যকে কো- অপ্ট করে নিয়ে তদন্ত কার্য সম্পন্ন করে সুপারিশ সহ প্রতিবেদন দাখিল করবেন।বিষয়টি সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধানকে পত্র দ্বারা জানানোর সিদ্ধান্ত সর্ব সম্মতিক্রমে গৃহিত ও অনুমোদিত হয়।
কিন্ত বিষয়টি ঈদের ছুটি ও কঠোর লক ডাউনের কারনে বিলম্ব প্রক্রিয়ায় পড়লে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) সাজিনূর রহমান গোপনে সুকৌশলে ছাত্র/ ছাত্রীদের কলেজে এনে কঠোর লক ডাউনের বিধি নিষেধ অমান্য করে কোনো কোনো ছাত্র/ ছাত্রীদের টাকা ফেরত প্রদান করে বিষয়টি ধামা- চাপা দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।