ঢাকা: বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের (সরকারিকরণ) দাবিতে টানা ১১ দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। তারা বলছেন, যতই বাধা আসুক, জাতীয়করণ ছাড়া ঘরে ফিরে যাবেন না।
শুক্রবার (২১ জুলাই) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ কথা জানান আন্দোলনরত শিক্ষকরা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ডাকে ১১ জুলাই থেকে ‘লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি’ চলছে। ওই দিন থেকে বিদ্যালয়ে ক্লাস বন্ধ রেখে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
সংগঠনটির সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রহমান মিয়া বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫% উৎসব ভাতা, এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য।
তাছাড়া বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেলের একধাপ নিচে প্রদান করা হয় এবং সহকারি প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রদান না করার ফলে উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারি প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ার প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারি প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে।
তিনি বলেন, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাবার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক,কর্মচারী টাকা পাওয়ার পূর্বেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যান। তাছাড়া কয়েক বছর ধরে কোনো প্রকার সুবিধা না দিয়েই অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪% কর্তন করা হচ্ছে যা অত্যন্ত অমানবিক। তাই অতিরিক্ত ৪% কর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলসহ অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট অফিস ঘেরাও করতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু অদ্যবধি কোন প্রতিকার পাননি।
অধ্যক্ষ বজলুর রহমান বলেন, এটা আমাদের রুজি রুটির কথা। সরকার থেকে একাধিকবার সমাধানের কথা বললেও কোনো সমাধানে আসেনি। এজন্য আজ রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা কেউ ঘরে ফিরব না। যতই বাধা আসুক না কেন; আন্দোলন চলছে, চলবে।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, এখনই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করতে হবে। অন্যতায় আমরা লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে যাব।