1. hmgrobbani@yahoo.com : admin :
  2. news@soroborno.com : Md. Rabbani : Md. Rabbani
  3. sayefrahman7@gmail.com : Sayef Rahman : Sayef Rahman
শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ০৮:৪২ অপরাহ্ন

‘রেহানা’র উচ্ছ্বসিত প্রশংসা হলিউড রিপোর্টে‍র

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ৯ জুলাই, ২০২১

রেহানা মরিয়ম নূর’— এ মুহূর্তে দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনের ‘টক অব দ্য টাউন’। দেশের চলচ্চিত্রে এক গর্ব, নতুন এক মাইলফলক। প্রথমবারের মতো আমাদের দেশের কোনো ছবি বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ কান চলচ্চিত্র উৎসবের ‘আঁ সার্তেঁ রিগা’ বিভাগে প্রদর্শিত হয়েছে। বুধবার (৭ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টা ১৫ মিনিট) কানের পালে দে ফেস্টিভ্যাল ভবনের সাল দুবুসি প্রেক্ষাগৃহে এটি প্রদর্শিত হয়। সেখানে উপস্থিত দর্শকদের ‘স্ট্যান্ডিং ওভেশন’ও পেয়েছে। বিজ্ঞাপন

বিশ্বের চলচ্চিত্র বিষয়ক অন্যতম শীর্ষ পত্রিকা ‘হলিউড রিপোর্টার’ এরই মধ্যে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ পরিচালিত ছবিটি নিয়ে রিভিউ ছাপিয়েছে। সেই রিভিউয়ে প্রশংসার ছড়াছড়ি। সাদের পরিচালনা কেবল নয়, ‘রেহানা’ অর্থাৎ ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র ফুটিয়ে তোলা শিল্পী বাঁধনের অভিনয়েরও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন হলিউড রিপোর্টারের রিভিউয়ার দেবরা ইয়ং। বাঁধন সম্পর্কে তিনি বলছেন, অসাধারণ শক্তি নিয়ে অভিনয় করেছেন। ছবিতে নীল রঙের ব্যবহার ও এর ক্যামেরার কাজেরও প্রশংসা করেছেন তিনি।

রেহানা মরিয়ম নূর। শুধু ছবির নাম নয়, ছবির নামের সঙ্গে মিলিয়ে কেন্দ্রীয় চরিত্রের নামও এটিই। এই চরিত্রটির যে অন্তর্নিহিত শক্তি, সেটি পুরোপুরি উপলব্ধি করতে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে ছবির শেষ দৃশ্য পর্যন্ত। এর আগ পর্যন্ত মেডিসিনের একজন সহকারী তরুণ অধ্যাপক, প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া কন্যার মা ও একজন বিধবা নারী হিসেবে রেহানাকে দেখা যাবে শত প্রতিকূলতার মধ্যেও মাথানত না করে অনড় থাকতে। ছবির শুরুর দিকেই মেডিকেল কলেজের একজন শিক্ষার্থীকে নকলের দায়ে বহিষ্কার করার মাধ্যমে রেহানা তার নৈতিক অবস্থানের জানান দেন।

তবে এই ঘটনাটি রেহানার পরিচয় তুলে ধরার শুরু মাত্র। তিনি কতটা শক্তিশালী একটি চরিত্র, সেটি বোঝা যাবে তখনই যখন এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগে একজন অধ্যাপকের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যান তিনি। নিজের সহকর্মী এবং পদাধিকারবলে তার চেয়ে উচ্চ পদে আসীন একজন ব্যক্তিকে আইনের মুখোমুখি দাঁড় করানোর যে চ্যালেঞ্জ রেহানা নেন, সেই লড়াই-ই এই ছবির উপজীব্য। একটুকরো হাড়ের জন্য ক্ষুধার্ত একটি কুকর যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে, রেহানা যেন ঠিক তেমনই তাড়না নিয়ে লড়াই করে যান। বিজ্ঞাপন

‘রেহানা’র উচ্ছ্বসিত প্রশংসা হলিউড রিপোর্টে‍র

‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’-র পর লেখক-নির্মাতা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের দ্বিতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি শুধু একজন অস্থির প্রকৃতির নারীর উত্তেজনায় ভরপুর আখ্যানই নয়, একজন নবাগত হিসেবে আজমেরী হক বাঁধনের দৃঢ়তাপূর্ণ অভিনয়ের এক অসামান্য প্রদর্শনীও। একজন নারী যিনি তার নৈতিক বিশ্বাসে দৃঢ়, বিশেষ করে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে যেভাবে একাগ্রচিত্তে লড়াই করে গেছেন— সেটিও কুর্নিশ পাওয়ার যোগ্য। রেহানার অপরিসীম মানসিক দৃঢ়তা একইসঙ্গে মানুষের কাছে তাকে নায়ক ও করুণার পাত্রে পরিণত করেছে। রেহানার এই একরোখা স্বভাব একদিকে নারীবাদীদের জন্য যেমন তাকে শতভাগ সমর্থনপ্রাপ্তিকে কঠিন করে তুলেছে, তার চেয়েও এই চরিত্রটি আরও অনেক বেশি অস্বস্তিকর তাদের জন্য যারা যৌন নির্যাতকদের পক্ষে কথা বলেন।

ছবিতে রেহানা বাংলাদেশের যে মেডিকেল কলেজে কাজ করেন, সেখানে যৌন নিপীড়ন নির্লজ্জ ও ভয়াবহভাবে ঝেঁকে বসেছে। সেখানেই রেহানার সহকর্মী অধ্যাপক আরেফিন (কাজী সামী হাসান), যিনি ছাত্রদের অনেক গুরুতর অপরাধকেও সহজভাবে নেন এবং নামমাত্র শাস্তি দেন; যেখানে রেহানা পারলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তি প্রয়োগ করেন। রেহানার মাথার সাদা স্কার্ফ তার আত্মিক বিশুদ্ধতারই যেন প্রতিরূপ। কিন্তু তিনি যখন অধ্যাপক আরেফিনের রুম থেকে ওই কলেজেরই শিক্ষার্থী অ্যানিকে ক্রন্দনরত অবস্থায় বের হয়ে আসতে দেখেন, তার নিজের চোখে মুখেই অশুভ শক্তির ছায়া যেন। রেহানা বুঝতে পারেন ভয়াবহ কিছু ঘটেছে অ্যানির সঙ্গে, যা আরও বিস্তারিত জানতে চান তিনি।

‘রেহানা’র উচ্ছ্বসিত প্রশংসা হলিউড রিপোর্টে‍র

কাহিনি যতই সামনে এগিয়েছে, পুরো বিষয়টির সঙ্গে রেহানার জড়িয়ে যাওয়াটা অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়ায়। ‘আমি একজন প্রত্যক্ষদর্শী এবং কোনোভাবেই আমি চুপ থাকতে পারি না’— এই ভাবনা থেকে রেহানা ঘটনাটি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে পারেন না। ঘটনাটি নিয়ে অধ্যক্ষের কাছে যেন অ্যানি অভিযোগ করে, তার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যান রেহানা। কিন্তু অনেক বুঝিয়েও শেষ পর্যন্ত অ্যানিকে অভিযোগ দায়ের করার বিষয়ে রাজি করাতে পারেন না। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেন, তিনি নিজেই ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করবেন। রেহানার একমাত্র লক্ষ্য ছিল, অধ্যাপক আরেফিন যেন ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং এর মাধ্যমে কলেজের আর কোনো শিক্ষার্থীকে যেন তার শিকার না হতে হয়।

কাউকে জনসম্মুখে সর্বোচ্চ শাস্তির মুখোমুখি করাতে রেহানার যে প্রয়াস, সেটি নিয়ে রক্ষণশীলতা থাকলেও ছবির কাহিনির এ পর্যন্ত বেশিরভাগ দর্শকই রেহানার সঙ্গে থাকবেন। কিন্তু এ তরুণীর মনের গহীন কুঠুরিতে লুকিয়ে থাকা যে আবেগ, সেটি ছবির দ্বিতীয়ার্ধকে একজন নারীর অবদমন, উদ্বেগ ও সহিংসতার এক শ্বাসরুদ্ধকর যাত্রায় পরিণত করে।

More News Of This Category
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি