মোহাম্মেদ সালাহ, সাদিও মানে, রবার্তো ফিরমিনো-লিভারপুলের প্রধান তিন গোল-মেশিন। দলকে জয় এনে দেওয়ার আশায় কালও এই তিনজনেই নেমেছিলেন মাঠে। কিন্তু তিনজনের কেউই গোলের দেখা পাননি। তারপরও জয় পেয়েছে লিভারপুল। নিজেদের মাঠে ইংলিশ ক্লাবটি ১-০ গোলে হারিয়েছে আয়াক্সকে। সালাহ-ফিরমিনো-সাদিও মানেদের হতাশার দিনে লিভারপুলকে এই জয়টা এনে দিয়েছেন তরুণ কার্তিস জোনস। ম্যাচের একমাত্র গোলটা করেছেন তিনিই।
নিজেদের ঘরের মাঠের এই জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই শেষ ষোলতে পা রাখল লিভারপুল। সঙ্গে ৫ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে লিভারপুল নিশ্চিত করেছে ডি গ্রুপ থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়াও।
আগামী ৯ ডিসেম্বর গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে হারলেও লিভারপুলের কিছুই যাবে আসবে না!
এবারের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুল শুরুটা করেছিল স্বপ্নের মতো। প্রথম তিন ম্যাচেই পায় বড় জয়। কিন্তু গত ২৫ নভেম্বর চতুর্থ ম্যাচে উড়তে থাকা লিভারপুলকে মাটিতে নামিয়ে আনে আটালান্টা। লিভারপুলের মাঠে এসেই লিভারপুলকে ২-০ গোলে হারিয়ে দেয় ইতালির ক্লাবটি। ঘরের মাঠের ওই হারে লিভারপুলের শেষ ষোলতে উঠার ভাগ্যটাও ঝুলে যায়। তবে কাল সেই অ্যানফিল্ডেই সেই অনিশ্চয়তার মেঘটুকু সরিয়ে ফেলল লিভারপুল।
নিশ্চিতভাবেই লিভারপুলের কালকের এই জয়ের নায়ক কার্তিস জোনস। লিভারপুলের তারকাদের ভিড় ঠেলে ইংল্যান্ডের ১৯ বছর বয়সী তরুণ মাঠে নামার ফুসরতই তেমন পান না। তবে কাল সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করেছেন। অবশ্য দলকে জেতানো গোলটির জন্য জোনস প্রতিপক্ষ আয়াক্সের গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানাকে বড়সড় একটা ধন্যবাদই হয়তো দিতে চাইবেন। কারণ, গোলটির জন্য তিনি যতটা কৃতিত্ব পাবেন, ঠিক ততটাই দায় আয়াক্সের গোলরক্ষকের। ওনানার শিশুতোষ ভুলের সুবাদেই যে গোলটি পেয়েছেন জোনস।
নেকো উইলিয়ামসের বাঁ পায়ের নিরিহ ধরনের ক্রসে আয়াক্সের জন্য বিপদের তেমন কারণই ছিল না। কিন্তু দুর্বল সেই ক্রসের বল নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে স্কুল বালকের মতো কাণ্ড করে বসেন আয়াক্সের গোলরক্ষক ওনানা। বল তার গ্লাভস ফসকে বেরিয়ে চলে যায়। তাতেও সমস্যা হতো না।
কিন্তু ওনানার হাতে লেগে বল যায় জোনসের পায়ে। যতই অনভিজ্ঞ হোন, এমন সহজ সুযোগ কি তিনি মিস করতে পারেন! গোলমুখের অতি কাছে পাওয়া সুযোগটি কাজে লাগিয়ে দল লিভারপুলকে ঠিকই এগিয়ে দেন তিনি। ৫৮ মিনিটে করা তার সেই গোলটিই শেষ পর্যন্ত লিভারপুলকে এনে দিয়েছে শেষ ষোল নিশ্চিত করা জয়।
কাল দিনের অন্য ম্যাচগুলোতে জয় পেয়েছে ইন্টার মিলান, লোকোমোটিভ মস্কো, অলিম্পিক মার্শেই। তবে কাল সবচেয়ে বড় চমকটি দেথিয়েছে শাখতার দোনেৎস্ক। ইউক্রেনিয়ান ক্লাবটি নিজেদের ঘরের মাঠের ফিরতি লেগেও হারিয়ে দিয়েছে দৈত্য রিয়াল মাদ্রিদকে। প্রথম লেগেও রিয়ালকে ৩-২ গোলে হারিয়েছিল শাথতার। তাদের কালকের জয়টি ২-০ গোলে। রিয়ালের আরেকটি দুর্ভাগ্যের দিনে ড্র হতাশায় পুড়েছে ম্যানচেস্টার সিটি ও বায়ার্ন মিউনিখ। ম্যান সিটি গোলশূন্য ড্র করেছে এফসি পোর্তোর সঙ্গে। অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের সঙ্গে বায়ার্ন মিউনিখের ড্রটি ১-১ গোলে। অবশ্য এই ড্রতে ম্যান সিটি, বায়ার্নের তেমন কিছুই হয়নি। কারণ, শেষ ষোলর’ টিকিট আগেই কেটে ফেলেছে তারা।