মো.আজির উদ্দিন/ইসমাঈল আলী টিপু::বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৬৯ ইং সনে যে ছিলেন সিলেটের জৈন্তাপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,দেওয়ান ফরিদ গাজী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে নিয়ে ৬৯ এর গণআন্দোলনের সময় জৈন্তাপুর ঐতিহাসিক বটতলায় ভাষন দেয়ার পূর্বে যার বাড়ীতে দাওয়াত খেয়েছিলেন,বঙ্গবন্ধু যাকে নামধরে ডাকতেন,দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে এসে যাকে ডেকে নিয়েছিলেন ঢাকায় তিনি সিলেটের জৈন্তাপুর দালানবাড়ির বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য মখছুছুল আম্বিয়া চৌধুরীর স্বাধীনতা যুদ্ধে ভূমিকা ভূমিকা শীর্ষক কিছু কথা নিম্নে তুলে ধরা হলো…..
ক.১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতা কর্মীদেরকে নিয়ে জৈন্তাপুর থানা কমপ্লেক্সে ঢুকে পাকিস্হানী পতাকা নামিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা জৈন্তায় প্রথম উত্তোলন করেছিলেন।
খ.তিনি তার মৌরসীসূত্রে প্রাপ্ত নিজস্ব ভূমিতে ১৮ বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন “সানরাইজ প্রি- ক্যাডেট স্কুল।পুরাতন টিনসেড ঘর ভেংগে ৯/১০ বছর আগে প্রতিবেশী সকল ভূমি মালিকদের সীমানা মাপজোক সাপেক্ষে চার তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে দোতলা পূর্ণ করে স্কুল ও একটি মসজিদ নির্মান করে অত্যন্ত সুনামের সহিত চালাচ্ছেন বর্তমান প্রতিষ্ঠানটি। কখনো কেউ কোনো দাবীদার বের হননি।স্কুলটি ১৮ বছর পূর্বে স্হাপনের সময় কিংবা ৯/১০ বছর পূর্বে বর্তমান দোতলা বিল্ডিং টি নির্মানের সময় এখনকার মতো প্রতিস্টানে আক্রমণকারী বা তার পক্ষের কেউ ই তো কোনো আপত্তি করেন নাই,দাবীও করেন নাই।
গ.জৈন্তায় ১৭ পরগনা শালিশ সমন্বয় কমিটি রয়েছে,রয়েছে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ঐতিহ্য ও শৃঙ্খলা, দেশে সম্পদ অধিকার ও বন্টনের কার্যকর আইন রয়েছ।এতোকিছুর পরও জৈন্তাপুর মডেল থানার ২০০ গজের মধ্যে অবস্হিত স্বনামধন্য ” সানরাইজ স্কুল” রাতের আধারে সন্ত্রাসী কায়দায়,গ্রীল ও অফিসের দরজার তালা ভেংগে লুটপাট,ভাংচুর ও লণ্ডভণ্ড করায় সামাজিক অঙ্গণে ও সোস্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভে ঝড়।স্কুলের অফিসে টাংগানো বঙ্গবন্ধু,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,আব্রাহাম লিংকনের ছবি ও বাণী তছনছ করে মেঝেতে ছুড়ে ফেলে দিয়ে রাতের আধারে স্কুলের নামটি ব্রাশ ও রঙ দিয়ে মুছে ফেলে দিয়েছে শয়তানচক্র।(অতীতেও একবার দাঙ্গাবাজরা স্কুল দখল নিয়ে অপচেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছে)।
ঘ.সানরাইজের ৫০ গজের মধ্যে জৈন্তাপুর প্রেসক্লাব অবস্হিত,হঠাৎ একজন চাঁদাবাজ ৫০ লক্ষ টাকা চাদা দাবী করে।২২ ডিসেম্বর ২০২০ ভোররাতে চাঁদাবাজরা দলবদ্ধভাবে তালা ভেংগে স্কুল অফিসে ঢুকে ভাংচুর -লুটপাট,ও তান্ডব চালিয়ে কয়েক ঘন্টা সকাল পর্যন্ত দখল করে রাখে,স্কুলে জাতির পিতা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি নামিয়ে রাতে ব্রাশ ও চুন দিয়ে স্কুলের নাম মুছে দেয় কুচক্রিমহল। সামনের দোকানের সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড হলো, স্হানীয় সাংবাদিক সহ অনেকেই বিষয়টি জানলেন, সিসিটিভির ফুটেজে পরিষ্কার দেখা গেলো,এলাকার সকলেই দিন দুপুরে এ ধ্বংসযজ্ঞ চাক্ষুষ দেখলো। জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের বর্তমান ভবন ও অফিস,জৈন্তাপুর সরকারী বালিকা বিদ্যালয় ও সরকারী হাইস্কুল, বেয়াম স্কুল, জৈন্তাপুরের বিশাল উপজেলা পরিষদ কম্প্লেক্স এর অধিকাংশ ভূমি( প্রায় ১৫/১৬বিঘা), জৈন্তাপুর শহীদ মিনার,গোয়াইনঘাট হাইস্কুল সহ আরো অনেক সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এই মখছুছুল আম্বিয়া চৌধুরী ও তার পরিবারের দানকৃত ভূমিতে আজো বিদ্যমান রয়েছে।
ঙ.স্বাধীনতা সংগ্রামের এই মহান যোদ্ধা, বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য এই মজলুম মানুষটির এ বিষয়ে থানায় দায়ের করা মামলাটি এখন পর্যন্ত FIR হলোনা- আসামী ধরাতো দূরের কথা!
জৈন্তাপুর থানা প্রশাসন তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ার পরও প্রভাবশালী রাসেল গংদের চাপে ও অসৎ কারণে প্রলুব্ধ হইয়া এখন পর্যন্ত আসামি গ্রেফতার কিংবা কোনপ্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নাই বিধায় প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন শুরু করেছেন সচেতন মহল।এলাকাবাসীর দাবী,বিষয়টি দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া জরুরি অন্যথায় অপুরণীয় ক্ষতির স্হল বটে।
আসুন দলমত নির্বিশেষে প্রশাসনসহ সকলের সুদৃষ্টি দরকার এতে রক্ষা হবে স্কুল এবং ফিরে আসবে দেশের একজন সূর্যসন্তানের গৌরবসম্পন্ন শিক্ষা ইতিহাস।