সিলেটে উৎসব নেই, স্কুলে স্কুলে বই বিতরণ শুরু

মো.আজির উদ্দিন/ইসমাঈল আলী টিপু ::করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও যথাসময়ে শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দিচ্ছে সরকার। তবে এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন এক পরিস্থিতিতে নতুন পাঠ্যবই হাতে পেতে শুরু করেছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নেই কোন শোরগোল; নেই উৎসবের আমেজ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হাতে নতুন বই তুলে দিচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

সারাদেশের মতো শুক্রবার (১ জানুয়ারি) সিলেটের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া শুরু হয়েছে। সকালে নগরীর সরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হাতে নতুন বই তুলে দেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম।

করোনার সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ছুটি ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হলেও বই সংগ্রহের জন্য ফের শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়েছে স্কুলগুলো।

সরকারের পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত মেনে ১ জানুয়ারি সকাল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বিনামূল্যে বই বিতরণ শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে নতুন বই নিতে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। সকাল থেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষে অভিভাবকেরা এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজে গিয়ে বই বিতরণের কর্মসূচিতে অংশ নেয়।

করোনা মহামারির ভয়াবহতা মাথায় রেখে এবার গতানুগতিক সময়ের মতো একদিনেই সব শিক্ষার্থীদের হাতে বই বিতরণে সমস্যার কথা আগেই জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে বই বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করলেও ১ জানুয়ারি থেকে ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌছাবে নতুন বই।

বৃহস্পতিবার বই বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনী আয়োজনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এ বছরের বই বিতরণ প্রক্রিয়ার স্পষ্ট ধারণা দেন। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার একেকটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের তিন দিন করে বই দেওয়া হবে। এভাবে মাধ্যমিকে বই বিতরণ চলবে ১২ দিন ধরে। যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কম, সেখানে একদিনেই বই দেওয়া হবে। আর যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী তুলনামূলক বেশি, সেখানে তিন দিনে বই দেওয়া হবে।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, সিলেট জেলায় এবার মাধ্যমিক স্তরে মোট বইয়ের চাহিদা ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ৬৪৮, দাখিল স্তরে ৯২ হাজার ৯৫৯ আর এবতেদায়ী স্তরে ৫ লাখ ৮২ হাজার ৭৫৮। সবমিলিয়ে মোট বইয়ের চাহিদা ৫৯ লাখ ৭০ হাজার ৩৬৫ কপি।

আর সিলেট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার প্রাক-প্রাথমিকে মোট বইয়ের চাহিদা ২৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬২৬ কপি।

শিক্ষাকে মানসম্মত করা এবং ঝরে পড়ার হার রোধ করতে ২০১০ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিবছর ১ জানুয়ারি ‘বই উৎসব’ করে আসছে। এদিন সারা দেশের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যে বই তুলে দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *