কখনো আইনজীবী, আবার কখনো সাংবাদিক কিংবা প্রভাষক পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করাই ছিলো শংকু রানী সরকার লিলি’র পেশা। কিন্তু প্রতারণার এ কৌশল ভালো ভাবে কাজে লাগালেও এবার নিজেকে আয়কর আইনজীবী পরিচয় দিয়ে জামিন করিয়ে দেওয়ার কথা বলে এক নারীর কাছ থেকে ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে পড়লেন বিপাকে। এজন্য তাকে ধরা পড়তে হলো সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যদের হাতে।
বুধবার (২০ এপ্রিল) বেলা ৩ টার দিকে সিলেট আদালত প্রাঙ্গণে প্রতারণার দায়ে তাকে আটক করেন আইনজীবীরা।
আটক শংকু রানী মেজরটিলস ইসলামপুর এলাকার ৩৫/২ এন আর টাওয়ারের বাসিন্দা বলে নিজেকে পরিচয় দিয়েছেন। এই ঠিকানা উল্লেখ করে নিজেকে আয়কর আইনজীবী পরিচয় দিয়ে একটি ভিজিটিং কার্ডও আছে তার। তবে গলায় ঝুলানো আছে ‘ইন্টারন্যাশনাল হিউমেন রাইটস’ মানবাধিকার সংস্থার একটি পরিচয়পত্র। তিনি ওই সংস্থা সম্পাদিত পত্রিকার ক্রাইম রিপোর্টার বলেও পরিচয় দেন। কিন্তু বাঁধ সাধে সাংবাদিক দেখেই। প্রতারণার দায়ে তাকে আটকের খবরে সাংবাদিকরা জড়ো হলে তিনি পরিচয় পরিবর্তন করে নিজেকে একটি কলেজের প্রভাষক পরিচয় দেন। তবে কোন পরিচয়ে যখন কাজ হচ্ছিলো না তখন শংকু রানী ক্ষেপে যান সাংবাদিকদের উপর। বলেন, ‘বাঁশ দিবো। আমি ক্রাইম রিপোর্টার। সব সাংবাদিকদের বাঁশ দিবো। একটা নয়, ৯ টা, ৬ টা বাঁশ দিবো।’
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহফুজর রহমান বলেন, ‘শংকু রানী নিজেকে আয়কর আইনজীবী পরিচয় দেন। এবং সিলেট কোর্টের তারই সহকর্মী একজন আইনজীবী দিয়ে একজন নারীর কারাগারে থাকা ছেলেকে জামিন করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে নগদে ৪৫ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু ভুক্তভোগী নারীকে বার বার ঘুরালেও নারীর ছেলেকে জামিন করাতে পারেননি। আজ আবার ভুক্তভোগী নারীকে আদালতে নিয়ে এসে ছেলের জামিন করাতে না পারায় ওই নারী কারণ জানতে চাইলে শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। যা আইনজীবীদের নজরে এলে তাকে আটক করা হয়।’
তবে শংকু রানীর প্রতারণার এ কাজ নতুন নয়। এর আগেও সে একবার প্রতারণা করে সিলেট কোর্ট প্রাঙ্গণে ধরা খেয়ে জেলে যেতে হয়েছিলো বলে জানান আইনজীবী এডভোকেট আশিকুর রহমান।
তবে নগদ ৩০ হাজার টাকা আদায় করে ভবিষ্যতে এমন কাজ সে আর করবে না মর্মে মুচলেকা রেখে শংকু রানীকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট এটিএম ফয়েজ।
একই সাথে এরকম প্রতারকচক্র থেকে জনগণকে সচেতন থাকারও আহ্বান জানান তিনি।