চট্টগ্রাম ব্যুরো: হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের অবরোধের কারণে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে যানবাহন চলাচল ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বন্ধ। সড়কে ইটের দেওয়াল বানিয়ে ও বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে অবস্থান নিয়েছে হেফাজত কর্মীরা। এতে খাগড়াছড়ি, রামগড়, ফটিকছড়ি ও নাজিরহাটের লোকজন কার্যত অবরুদ্ধ অবস্থায় পড়েছে।
শনিবার (২৭ মার্চ) বিকেল তিনটার দিকেও চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কের হাটহাজারীর ত্রিবেণীর মোড়ে হাজারখানেক হেফাজত কর্মী অবস্থান করছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। পুরো এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। এছাড়া ২৫০ র্যাব এবং বিজিবির ১০০ সদস্য মোতায়েন আছে। দোকানপাট বন্ধ আছে। তবে পরিস্থিতি তুলনামূলক শান্ত।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। তবে যানবাহন চলাচল এখনও স্বাভাবিক হয়নি। পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন আছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ি-ফটিকছড়িসহ ওই এলাকার লোকজনকে চট্টগ্রামে যেতে গিয়ে দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার আগে গ্রামের ভেতর দিয়ে একটি সড়ক দিয়ে ছোট ছোট কিছু যানবাহন চলাচল করছে। অনেকে পায়ে হেঁটেও অবরোধস্থল পার হচ্ছেন। দূরপাল্লার বড় যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ।
এর আগে গতকাল শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুরে হাটহাজারী উপজেলায় দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার একদল ছাত্র মিছিল বের করে। বাংলাদেশ সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে তারা হাটহাজারী থানার সামনে জড়ো হয়। একপর্যায়ে তারা থানায় ভাঙচুর করে। এছাড়াও স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও সরকারি ডাকবাংলোর ভেতরে ঢুকে তাণ্ডব চালায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ গুলি ছুঁড়লে মাদরাসার ছাত্ররা পিছু হটে। এরপর তারা মাদরাসার মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে ১১ জনকে বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে সাড়ে চারটার মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে চারজনকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। হাসপাতালের নিবন্ধন বই অনুযায়ী তারা হলেন- রবিউল ইসলাম, মিরাজুল ইসলাম, নাসিরুল্লাহ ও মিজানুর রহমান। এর মধ্যে তিনজন হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্র। আরেকজন পেশায় দর্জি এবং হেফাজত কর্মী বলে পুলিশ জানিয়েছে।